কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশন স্কুলের ভবানীপুর শাখার দশম শ্রেণির সব পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্ত করছে কলকাতার সাইবার ক্রাইম থানা। প্রাথমিকভাবে স্কুলের ছাত্ররা এই প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে আশঙ্কা করা হলেও এখন কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা আরও অনেকেই এই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত। তাঁদের মতে, যেভাবে হোয়াটসঅ্যাপে প্রধান শিক্ষকের গলার স্বর নকল করা হয়েছে তা শুধু ছাত্রের পক্ষে সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে গ্রেফতার বিজেপির ওই রাজ্যের সভাপতি, লিখলেন জয় শ্রীরাম
এক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে, প্রধান শিক্ষকের নামে হোয়াটসঅ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলে তাঁর গলা নকল করে ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এলাকার টিউটোরিয়াল হলগুলির জড়িত থাকার আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ এবং তদন্তকারীরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা দে’র অনুমান, এটি মিলিত ষড়যন্ত্র। আবার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য নিয়ে প্রধান শিক্ষকের গলা নকল করা হয়েছে কিনা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘সাইবার ক্রাইম থানা বিষয়টি তদন্ত করছে আমরাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের স্কুলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে ছাত্রদের পড়ানো হলেও তা এখনও প্রথম পর্যায়ে রয়েছে। ফলে ছাত্রদের পক্ষে এত দক্ষতার সঙ্গে তাঁর গলা নকল করা সম্ভব নয়।’ উল্লেখ্য, দশম শ্রেণির দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের পরীক্ষার সব বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁস করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস মেসেজে সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকের স্বর নকল করে প্রশ্ন চাওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের দাবি, কোনও ছাত্র সাধারণত যে বিষয়ে দুর্বল সেই বিষয়ে প্রশ্ন চেয়ে থাকবে। এভাবে সমস্ত বিষয়ের প্রশ্ন চেয়ে থাকবে না। ফলে সে ক্ষেত্রে স্কুলের আশেপাশের টিউটোরিয়াল হোমগুলি জড়িয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রধান শিক্ষকের। এই কারণে স্কুলের আশেপাশের টিউটোরিয়াল হোমগুলি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদারও কার্যত একই দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, শুধুমাত্র ছাত্রদের পক্ষে এভাবে এই কাজ করা সম্ভব নয়। তিনি জানান, করোনার সময় তাঁদের স্কুলে শিক্ষকদের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করে প্রশ্নপত্র চাওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে সর্বভারতীয় গৃহ শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের দাবি, যদি কোনও টিউটোরিয়াল হোম এসব করে থাকে তাহলে তাদের সঙ্গে স্কুলের কোনও শিক্ষকের যোগ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক স্কুল শিক্ষক টিউটোরিয়াল হোমে পড়ান। তাঁদের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস করছে কিনা তা তদন্ত করা দরকার। এক্ষেত্রে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, কলকাতার সাইবার ক্রাইম বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।