সম্প্রতি প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন বোলপুরের পদ্মশ্রী চিকিৎসক ডাক্তার সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যা মন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবার চিকিৎসার জন্য তিনি অনলাইনে একটি হিমোডায়ালিসিস মেশিন অর্ডার করেছিলেন। আর সেই সুযোগে তাঁর কাছ থেকে সাড়ে ৪ লক্ষেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল প্রতারকরা। ১০ দিনের মাথায় আমদাবাদ থেকে দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় পুলিশ যেভাবে তদন্ত করেছে তাতে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসা উঠে এসেছে। ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডাক্তারবাবুর কন্যা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দিরাদেবী থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গত ২২ জুলাই। সুশোভনবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে অনলাইনে হিমো ডায়ালিসিস মেশিন কেনার চেষ্টা করছিলেন তাঁর মেয়ে। সেইমতোই তিনি অনলাইনে সার্চ করে ‘রাধে কিডনি ইকুপমেন্ট’ নামে একটি সংস্থার নম্বর খুঁজে বার করেন। এরপর ফোন মারফত সেই সংস্থার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। কিন্তু, সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয় ওই মেশিন ডেলিভারির আগেই সমস্ত টাকা অনলাইনে থাকে মেটাতে হবে। প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে সংস্থার দেওয়া সেই শর্তে রাজি হয়ে যান মন্দিরা দেবী। এরপর কয়েকটি কিস্তিতে তিনি ৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ওই সস্থাকে মিটিয়ে দেন। এরপরেই ঘটে বিপত্তি।
মেশিনটি ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিল গত ২২ জুলাই। তারপরেও মেশিন ডেলিভারি না হওয়ায় তিনি ওই সংস্থার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। অবশেষে তিনি প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন বুঝতে পেরে মানিকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। যে সমস্ত অ্যাকাউন্টে কিস্তির টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল প্রথমে সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির মালিকানা নির্ধারণ করে সেগুলি ফ্রিজ করে দেয় পুলিশ।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য খতিয়ে দেখে পুলিশ মিলন মানসুখ ভাই ভাদোদরিয়া, রবীন্দ্র কুমার সুতার এবং কৃত্তিকা রবীন্দ্র কুমার এই তিনজনের নাম জানতে পারে। সেই সূত্র ধরে এগোতে থাকে পুলিশ। পরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন তিনজনই হলো আহমেদাবাদের বাসিন্দা। অবশেষে আমদাবাদের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের অবস্থান নির্দিষ্ট করে সেখানে হানা দেয় পুলিশের একটি দল। সেখান থেকেই দু'জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেইসঙ্গে ডাক্তারবাবুর কন্যার সমস্ত টাকায় উদ্ধার হয়েছে।