প্রথমে একের পর এক হেল্পলাইনে ফোন। সব জায়গা থেকেই মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। এরপর কোনওরকমে অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু। এরপর বাড়িতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে মৃতদেহ। গত কয়েকদিন ধরে সেই একই অভিযোগ বাংলার জেলায় জেলায়। এবার সেই ছবিরই পুনরাবৃত্তি বাগুইআটিতে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ অসিত দে। অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী তিনি। করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়়িতেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন স্ত্রী। কিন্তু সেখানেও বিশেষ পরিষেবা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। এরপর অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের। ওই অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়েই মৃতদেহ রঘুনাথপুরের বাড়িতে আনা হয়।
এরপর থেকে শুরু অধীর অপেক্ষা। রাতভর দেহ আগলে বসে থাকেন তাঁর স্ত্রী। এদিকে তাঁর স্ত্রীও অসুস্থ। প্রতিবেশীদের দাবি, রাত থেকে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও সংস্থা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়নি। অগত্যা বাড়িতেই পড়ে থাকে দেহ। প্রায় ১১ ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে থাকে দেহ। তাঁর ছেলেও অন্যত্র থাকেন। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, আতঙ্কে অনেকেই দরজা, জানালা বন্ধ করে রাখেন। এর জেরে আরও সমস্যায় পড়ে যায় পরিবার। তবে কয়েকজন প্রতিবেশী অবশ্য় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। বাগুইআটি থানার পুলিশও শুক্রবার সকালে এসে খোঁজখবর করে যায়। প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
এদিকে করোনা আক্রান্তের দেহ সৎকারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস ইতিমধ্যেই দিয়েছে রাজ্য সরকার। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। তারপরেও কেন এত অবহেলা? কেন বার বার এই হয়রানির মধ্যে পড়ছে গোটা পরিবার?কেন এব্যাপারে কোনও সঠিক পরিকল্পনা করা হচ্ছে না?