আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে রাজপথে প্রতিবাদের ঝড় এখন অনেকটাই স্তিমিত। যদিও এখনও এ নিয়ে খবর হচ্ছে। বিশেষ করে যেদিন যেদিন আদালতে আরজি কর মামলার শুনানি থাকে, সেই দিনগুলিতে তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ, আলোচনা প্রভৃতি হয়। আর সেই প্রেক্ষাপটেই ফেসবুকে নিজের এক বিশেষ অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। যা যথেষ্ট লক্ষ্যণীয়।
দেবাংশুর দাবি, সদ্য তিনি আবিষ্কার করেছেন, ৫০ জনেরও বেশি মানুষ গত কয়েক দিনে তাঁকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন! অথচ, দেবাংশু জানতেন, আগে থেকেই তাঁরা তাঁর ফেবু বন্ধু! তাহলে?
দেবাংশুর দাবি, আসলে এঁরা সকলেই আরজি করের ঘটনার পর পরই তাঁকে আনফ্রেন্ড করেছিলেন। এখন আবার সেই তাঁরাই নাকি তাঁকে গণহারে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে শুরু করেছেন!
এই প্রসঙ্গে দেবাংশু তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'আরজিকর কান্ডের সময়ে আনফ্রেন্ড করে দিয়েছিল, এখনও পর্যন্ত এরকম ৫০ জনের উপরে পুনরায় রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে শেষ কয়েকদিনে। যদিও তখন বুঝতে পারিনি, আবার রিকোয়েস্ট আসা দেখে বুঝলাম যে এরা এতদিন ছিল না.. '
এই ঘটনা যে তাঁকে ব্যথিত করেছে, তাও লোকাননি দেবাংশু। এবং কেন তিনি ব্যথিত হয়েছেন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তাঁর বার্তা, কারও জন্য আন্তরিকভাবে কোনও কাজ করার পরও বদলে তাঁদের কাছ থেকে এহেন প্রত্যাখ্যান (ফেসবুকে আনফ্রেন্ড করা) পেয়েছেন বলে যে তিনি আহত, তা কিন্তু নয়। তিনি ব্যথিত হয়েছেন, বহু মানুষের মধ্যেই বিরুদ্ধ মতামত গ্রহণের ক্ষেত্রে অসহিষ্ণুতা ক্রমশ বেড়ে চলা দেখে।
দেবাংশুর ভাষায়, 'দুঃখের বিষয়, এর মধ্যে এমন কিছু মানুষও আছেন যাদের কারোর পরিবারের জন্য মধ্যরাত্রি অবধি জেগে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছি, কারোর বিপদে নিজেও ছুটে গিয়েছি সশরীরে...'
'...খারাপ লাগার বিষয় সেগুলোর কোনোটাই নয়। খারাপ লাগার কারণ, যখন টের পাই মানুষের সহনশীলতা দিন দিন এমন ভয়ঙ্কর হারে কমে যাচ্ছে!'
এরপর দেবাংশু জানিয়েছেন, যে বন্ধুরা ইস্যুভিত্তিক কারণে বন্ধুত্ব (ভার্চুয়াল) ত্যাগ করেন, তাঁদের তিনি আর বন্ধু তালিকায় স্থান দিতে রাজি নন। তিনি লিখেছেন, 'তবে আপনাদের সানন্দের সঙ্গে জানাই, এই প্রত্যেকটি রিকোয়েস্ট আমি ডিলিট করে দিয়েছি। অন্তত এই জীবনে আর তাদেরকে বন্ধুত্বের তালিকায় জায়গা দিতে পারব না।'
কিন্তু, ফেসবুকে কে কাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাল, কিংবা কে কাকে আনফ্রেন্ড করল, সে তো একেবারেই ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাহলে দেবাংশু এ নিয়ে আলাদা করে পোস্ট করলেন কেন?
এই প্রশ্নের জবাবও দিয়ে রেখেছেন তৃণমূলের এই যুব নেতা। তাঁর বক্তব্য, 'ঘটনাটা হয়তো শেয়ার করার মত নয়, তবু কেন জানিনা মনে হলো আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিই।'