আরজি কর কাণ্ডের আবহে ডাক্তার এবং সাধারণ মানুষের আন্দোলনে জেরবার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। কয়েকদিন আগেই জুনিয়র চিকিৎসকরা লালবাজার অভিযানে গিয়ে 'নৈতিক জয়' ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। এবার তাঁদের আন্দোলনের ক্ষেত্র স্বাস্থ্যভবন। এরই মাঝে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্যে বার্তা পাঠিয়েছিল নবান্ন। তবে পালটা শর্ত চাপিয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরাও। এই আবে এবার চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন তৃণমূল নেতা। (আরও পড়ুন: সিজার তালিকা বলছে 'আছে', পোস্টমর্টেম বলল 'নেই', রহস্য নির্যাতিতার পোশাক নিয়ে)
আরও পড়ুন: একের পর এক 'ফোল্ডার', সত্যি সন্দীপের ল্যাপটপ থেকে মিলেছে নাকি 'ওসব'?
আরও পড়ুন: 'দিদিমণির কোলে বিনীত গোয়েল দোলে', আরজি কর আন্দোলনের মাঝে বিস্ফোরক সুকান্ত
উল্লেখ্য, গতকাল নবান্ন থেকে মুখ্যসচিবের তরফ থেকে চিঠি গিয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে। সেখানে বৈঠকের জন্যে আহ্বান জাানো হয়েছিল তাঁরে। তবে চিকিৎসকরা তার জবাবে ৪টি শর্ত চাপান বৈঠে বসার জন্যে। চিকিৎসকদের দাবি ছিল - নবান্নের বৈঠকে অন্তত ৩০ জন প্রতিনিধিকে যেতে দিতে হবে; গোটা বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে; আরজি কর আবহে যে পাঁচ দফা দাবি তোলা হয়েছে, তা নিয়েই আলোচনা করতে হবে; গোটা বৈঠক করতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে। এর এপরই গতরাতে একটি পোস্ট করে দেবাংশু ডাক্তারদের কটাক্ষ করেন। ডাক্তারদের উল্লেখ না করেই তাঁর পোস্টে দেবাংশু লেখেন, 'যদি বাস সার্ভিসে ধর্মঘট হয় এবং সরকার বৈঠক করার কথা বলে, তাহলে তার জন্য অবশ্যই একটি ব্রিগেড গ্রাউন্ড থাকতে হবে! কারণ প্রতিটি বাসের নিজস্ব প্রতিনিধিত্ব থাকবে তাতে!' মনে করা হচ্ছে, বৈঠকে চিকিৎসকদের প্রতিনিধি সংখ্যার বিষয়টি নিয়েই দেবাংশুর এহেন পোস্ট।
আরও পড়ুন: 'ব, খ, গ… কিন্তু জানি', নিজের 'গালির স্টক' নিয়ে রোদ্দুর রায়কে চ্যালেঞ্জ কুণালের
এদিকে গতকালও বৈঠক না হওয়ায় রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য একের পর এক নিশানা করেছেন জুনিয়র ডাক্তারদের। এই আন্দোলনের পেছনে রাজনীতির খেলা আছে বলে অভিযোগ তুলেছেন খোদ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তবে সেই অভিযোগের জবাব দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষে কিঞ্জল নন্দ জানিয়েছেন, এই আন্দোলনে রাজনীতির কোনও রঙ নেই। অন্যান্য জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। তিনি বলেন, 'এত হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামছেন। রোদে পুড়ে, জলে ভিজে এত মানুষ রাস্তায় নামছেন। আমরা চাইছি মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে সদর্থক আলোচনা। আমরা চাইছি মিডিয়ার সামনে সদর্থক আলোচনা। নবান্নের আলোচনায় আমাদের কোনও আপত্তি নেই। জানালেন জুনিয়র ডাক্তাররা।'
বর্তমানে চিকিৎসকদের দাবিগুলির মধ্যে অন্য়তম কয়েকটি হল - ডিএমই, ডিএইচএস ও স্বাস্থ্যসচিবকে অপসারণ করতে হবে। কারণ সেমিনার রুমের পাশের রুম ভাঙার ক্ষেত্রে তাঁদেরই সই ছিল। আমরা মনে করি গোটা স্বাস্থ্য পরিকাঠামোতে দুর্নীতিতে তাঁরাও জড়িত; বিনীত গোয়েলকে অপসারণ করতে হবে। তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার। ডিসি নর্থ ও ডিসি নর্থের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের পদক্ষেপ নিতে হবে; সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় থ্রেট কালচারের অবসান ঘটাতে হবে। মেডিক্যাল পড়ুয়া, জুনিয়র ডাক্তার ও ডাক্তারদের গণতান্ত্রিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।