মেডিক্যালের টোসিলিজুমাব দুর্নীতি কাণ্ড গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার এই ঘটনা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। আগামী ৭ জুন প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
তাপস মাইতি নামে এক আইনজীবী জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। মামলাকারীর তরফে দাবি করা হয় যে, এই ঘটনায় তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি জড়িত রয়েছেন। সেক্ষেত্রে তদন্ত কমিটি গঠন হলেও স্বচ্ছভাবে তদন্তের ওপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মামলাকারীদের আরও দাবি, সরকারি হাসপাতাল থেকে যেভাবে এতগুলো জীবনদায়ী ওষুধ উধাও হয়ে গিয়েছে, তা অত্যান্ত গুরুতর বিষয়। সেক্ষেত্রে যথাযথভাবে এই দুর্নীতির তদন্তও হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে উধাও হয়ে যায় ২৬টি জীবনদায়ী টোসিলিজুমাব ওষুধ। অভিযোগ ওঠে, প্যাথলজি বিভাগের নমুনা পরীক্ষার ফর্মে ভুয়ো প্রেসক্রিপশন তৈরি করে এই দুর্নীতি করা হয়েছে। ঘটনায় এক তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ট একজন চিকিৎসকের প্রত্যেক্ষ ভূমিকার বিষয় উঠে আসে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, ওই চিকিৎসক ভূয়ো প্রেসক্রিপশন জমা দিয়ে খেপে খেপেকর্তব্যরত এক নার্সের কাছ থেকে ২৬টি টোসিলিজুমাব ওষুধটি তুলে নেন। এই ঘটনায় হাসপাতালেরই ওই চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশের নাম জড়ায়।
একইসঙ্গে এই ঘটনায় তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজিরও নাম উঠে আসে। এই দুর্নীতি নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম চিঠি দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের পাশাপাশি দোষীদের বহিষ্কার অথবা সাসপেন্ডের দাবি জানান চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, একটি ফোনালাপের অডিও ফাঁস হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার সূত্র ধরে কলকাতা মেডিক্যালের এই দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসে। এর পরই ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য দফতর। তিন সদস্যের এই কমিটিতে মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাস্থেশিয়া, কার্ডিওথোরাসিক ও সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে।
৩ দিনের মধ্যে এই ঘটনার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এই ঘটনার মধ্যেই এদিন স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়।