ডেঙ্গি হলে মানুষজন আতঙ্কে ভোগে। কারণ এই রোগের চিকিৎসা নেই। আবার এই রোগে মারা যায় মানুষ বেশি। গোটা দেশে কোনও ওষুধ নেই ডেঙ্গির। মশাবাহিত এই সংক্রমণের চিকিৎসা হয় বিশেষ করে উপসর্গভিত্তিক। তবে এবার সেই ডেঙ্গির প্রত্যক্ষ চিকিৎসা আসতে চলেছে বলে খবর। কারণ ডেঙ্গির মোকাবিলা করতে ওষুধ আনছে সিরাম ইনস্টিটিউট। ডেঙ্গিকে মোকাবিলা করতে মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি আনতে চলেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। যার ফলে অ্যান্টিবডি সরাসরি হারিয়ে দেবে চাররকম ডেঙ্গি ভাইরাসকে। প্রথম দু’টি পর্বে মিলেছে সাফল্য। এবার তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হতে চলেছে বলে খবর।
তবে বড় খবরটা হচ্ছে, বাংলায় এই ট্রায়াল হতে চলেছে। নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে এই ট্রায়ালে সামিল হতে চলেছে এনআরএস হাসপাতাল বলে সূত্রের খবর। তারপর ওষুধটা এলে ডেঙ্গি মোকাবিলা করা বাঁ–হাতের খেলা হয়ে যাবে। ওই ওষুধে থাকবে প্রচণ্ড ডেঙ্গিকেও রুখে দেওয়ার দাওয়াই। এমনকী বহু মৃত্যু এড়ানো যাবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। যদিও এই বছর প্রথম বাংলায় ডেঙ্গির প্রকোপ অত্যন্ত কম। ফলে সেভাবে আলোচনা হচ্ছে না। কিন্তু ডেঙ্গিকে চিরতরে শেষ করে ফেলতে এই দাওয়াই আসছে দেশে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘যখন নতুন কেউ সিগারেট খেতে শেখে তখন....’, ববির পাশে দাঁড়িয়ে মদনের কড়া বার্তা বিধায়কদের
ডেঙ্গিতে এবারও মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গির সংক্রমণ বাড়তি মাথাব্যথার কারণ ছিল স্বাস্থ্য কর্তাদের কাছে। তবে এমন আবহে নতুন ওষুধ আসার সম্ভাবনায় আশার আলো দেখছেন চিকিৎসকরা। সিরাম নির্মিত ‘ডেঙ্গি–শিল্ড’ নামের এই মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সাফল্য পেয়ে ভবিষ্যতে দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেলে অকালমৃত্যু আটকানো যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দেশের ২০টি ট্রায়াল সেন্টারে ৫–১৪ বছরের শিশু এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সি প্রাপ্তবয়স্কদের এই থার্ড ফেজ ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করানো হবে। ডেঙ্গি রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁদের উপর প্রয়োগ করা হবে এই ডেঙ্গি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি থেরাপি।
সংস্থা সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ে অ্যানিমাল ট্রায়ালের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে হিউম্যান ট্রায়ালে এই মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি অস্ট্রেলিয়ায় ৪০ জনের উপর এবং পরে ভারতের ২৫০ জনের উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাতে কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি। তাই এবার তৃতীয় ট্রায়াল। এই বিষয়ে বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ফেসিলিটেটর সংস্থার সর্বভারতীয় কর্তা স্নেহেন্দু কোনার বলেন, ‘অ্যান্টিবডি এক ধরনের প্রোটিন। যা আমাদের শরীরের ইমিউনিটি ব্যবস্থায় স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয়। টিকার প্রতিক্রিয়ায় সেটি তৈরি হওয়ার পরে ভাইরাস–ব্যাকটেরিয়ার মতো হামলাকারী জীবাণুকে নিকেশ করে। অ্যান্টিবডি তৈরি হতে কিছু সময় লাগে। তখন সময় নষ্ট না করে বাইরে থেকে মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি প্রয়োগ করা হলে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে সংক্রমণ।’