বাংলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করল। আজ, সোমবার ১ জুলাই ডক্টরস ডে হিসাবে পালিত হয় রাজ্যে। ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম এবং মৃত্যুর দিনকে ডক্টরস ডে বলা হয়। কিন্তু এই আবহে উদ্বেগ বাড়াল ডেঙ্গি। বাড়তে শুরু করেছে এই মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গির বাহক মশা এডিস ইজিপ্টাই শুষ্ক শীতল আবহাওয়ায় জন্মায় না। এখন সেভাবে বর্ষা প্রবেশ করেনি রাজ্যে। তবে বেড়েছে মশার উপদ্রব। তাই রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গি হচ্ছেই। মালদা, মুর্শিদাবাদকে পিছনে ফেলে ডেঙ্গিতে রাজ্যে শীর্ষস্থানে উঠে এল উত্তর ২৪ পরগনা। আক্রান্তের সংখ্যায় প্রথম পাঁচের মধ্যে জেলাগুলির মধ্যে তিনটিই কলকাতা লাগোয়া জেলা।
এদিকে বর্ষার দাপট বাড়তে শুরু করলে কলকাতা এবং জেলায় হু হু করে বাড়বে ডেঙ্গি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন সেভাবে বর্ষা দাপট দেখাতে শুরু করেনি। কয়েকদিন হল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তাও দক্ষিণবঙ্গে খুব জোরালো নয়। অথচ এই আবহেই ডেঙ্গির সংখ্যা উর্দ্ধমুখী। সেই ইঙ্গিতই মিলতে শুরু করেছে। এক জানুয়ারি থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত পাওয়া স্বাস্থ্যদফতরের রিপোর্ট থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। চার বছর আগেও এমন আবহে ডেঙ্গির কথা কেউ ভাবতে পারতেন না। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যের ১৬টি জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।
আরও পড়ুন: আবার শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ‘জনতার দরবার’, লোকসভা নির্বাচন মিটতেই সরগরম কালীঘাট
অন্যদিকে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখন বাংলায় মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৪০০। আক্রান্তের তালিকায় শীর্ষে থাকা পাঁচ জেলা হল— উত্তর ২৪ পরগনা, মালদা, মুর্শিদাবাদ, হুগলি এবং কলকাতা। আর তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই পাঁচ জেলাতেই মোট আক্রান্তের সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। এরপর তাহলে কী হবে? সাধারণ মানুষের মনে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মশার উপদ্রব সব জেলাতেই আছে। সেখানে কাউকে কামড়ালে ডেঙ্গি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে সারা বছর লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হন ডেঙ্গি রোগে। সুতরাং আশঙ্কার সঙ্গে আতঙ্কও মানুষকে গ্রাস করেছে।
এছাড়া ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৭৪। সেটাই এই কয়েক মাসে ১১২১ সংখ্যায় পৌঁছয়। আর এখন তা পৌঁছেছে ১৪০০ সংখ্যায়। সুতরাং পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক সেটা এখন স্পষ্ট হয়েছে। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধ রয়েছে বাংলায়। তাই আর্থিক টানাটানির মধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে। গত মঙ্গলবার দিন রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে নানা অসুবিধার কথাও জানান স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। নবান্নের শীর্ষকর্তাদের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা অনুরোধ করেন, আর্থিক সমস্যার মধ্যেও যে কোনওভাবে সেপ্টেম্বর–অক্টোবর পর্যন্ত যেন ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে সহায়তা করা হয়। এখন যে পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে তাতে উত্তর ২৪ পরগনা ১৭৬, মালদা ১৭৪, মুর্শিদাবাদ ১৫৩, হুগলি ১৪৫ এবং কলকাতা ১১৩। এই সংখ্যায় মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।