সম্প্রতি কলকাতা সহ বেশ কয়েকটি পুরসভা এলাকায় বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা সামনে এসেছে। তাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে, পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে এইসব বাড়ি তৈরি হয়েছে। আর তার ফলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় জলাশয় বা পুকুর বুজিয়ে বেআইনিভাবে বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে কিনা তার উপর নজরদারি বাড়ানোর জন্য সব পুরসভাকে নির্দেশ দিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। একইসঙ্গে নির্দেশে বলা হয়েছে, এবার থেকে আর কোনও পুরসভা পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে ফেলার অনুমতি দিতে পারবে না।
আরও পড়ুন: বিধাননগরে হেলে পড়ল ২টি বেআইনি বহুতল, বাম জমানায় তৈরি দাবি মেয়রের
দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, পুকুর বা জলাশয়ে বুজিয়ে বাড়ি তৈরি হলে তা খতিয়ে দেখতে হবে। সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে খতিয়ে দেখতে হবে এবিষয়ে কোনও অনুমতি রয়েছে কিনা। তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করতে হবে। পুর ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকের মতে, সম্প্রতি যে সমস্ত বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে সেগুলি জলাশয় বা পুকুর বুজিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল। এরকমভাবে জলাশয় বুজিয়ে বাড়ি করলে পাইলিংয়ের ভিত শক্ত না হলে গোটা বাড়ি বসে যেতে পারে। ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য, পুকুর বা জলাশয় ভরাট করার সঙ্গে সঙ্গে মাটি শক্ত হয় না। সেখানকার মাটি শক্ত হতে দীর্ঘদিন সময় লেগে যায়। মূলত সেই কথা মাথায় রেখেই পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও কঠোর হতে বলা হয়েছে পুরসভাগুলিকে।
নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, কোন বাড়ির উচ্চতা ১০ মিটারের বেশি এবং পাহাড়ি এলাকার ক্ষেত্রে ৬.৫ মিটারের বেশি হলেই সেখানকার মাটির পরীক্ষা করতে হবে। তাছাড়া কোনও বাড়িতে মাটির নিচে কোনও নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলে সেক্ষেত্রে যদি বাড়ির ১৫ মিটার মধ্যে কোনও জলাশয় থাকে তাহলে মাটির পরীক্ষা করতে হবে।
আবার অভিযোগ ওঠে, পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে অনেকে সেটির কনভারশন করিয়ে নেন। এরফলে খাতায়কলমে জমির চরিত্র বদলে যায়। জানা যাচ্ছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জমি তিন কাঠার কম হলে বিএলআরও থেকে এবং বেশি হলে ডিএলআরও থেকে কনভারশন করাতে হয়। এক্ষেত্রে প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে থাকে জমির চরিত্র বদলের। তাই পুরসভাগুলিকে এবিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সবকিছু খতিয়ে দেখেই বাড়ি তৈরির জন্য পুরসভাকে ছাড়পত্র দিতে বলা হয়েছে। ভিত তৈরির সময় থেকেই নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।