কলকাতার ডিসান হাসপাতালের লাইসেন্স আগেই বাতিল করা উচিত ছিল। শুধুমাত্র গুরুতর রোগীরা চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করেনি স্বাস্থ্য কমিশন। বুধবার কমিশনের দায়ের করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় ঠিক এই কথাই বলেছেন কমিশনের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে হাসপাতালকে অবিলম্বে মৃত রোগীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
গত ১০ অগাস্ট রাতে কলকাতার ডিসান হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুল্যান্সে মৃত্যু হয় এক করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার। পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোম থেকে ডিসান হাসপাতালে আনা হয়েছিল তাঁকে। পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার কাছে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা মিটিয়েও দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। বাকি ২০,০০০ টাকা না দিলে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হবে না বলে জানানো হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। এর পর টাতা জোগাড় করতে করতেই অ্যাম্বুল্যান্সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বৃদ্ধা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সেদিন বৃদ্ধাকে মৃত অবস্থাতেই হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ডিসান কর্তৃপক্ষের এই দাবি মানেনি স্বাস্থ্য কমিশন। তারা জানিয়েছে, হাসপাতালে যখন আনা হয়েছিল তখন বৃদ্ধা জীবিত ছিলেন।
এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে রাজ্যজুড়ে। তাতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে স্বাস্থ্য কমিশন। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার কমিশনের চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সুপার স্পেশ্যালিটি এই হাসপাতাল।
কমিশনের তরফে অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই হাসপাতালের লাইসেন্স আগেই বাতিল করা উচিত ছিল। কিন্তু গুরুতর রোগীরা চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে তা করিনি। তবে এর পর কোনও বেগড়বাই করলে সরাসরি হাসপাতাল সিল করার নির্দেশ দেবে কমিশন।
সঙ্গে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রোগীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে হাসপাতালকে। তার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে ১৪ দিনের মধ্যে। মামলা চলাকালীন কোনও রোগীর কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ কোনও অর্থ দাবি করতে পারবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।