অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, দলের রাশ যে তাঁরই হাতে রয়েছে তা গত সপ্তাহে দলের কর্মসমিতির বৈঠকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক ঘনিষ্ঠদের ছেঁটে ফেলে নিজের বিশ্বস্ত লোকেদের জায়গা দিয়েছিলেন কর্মসমিতি ও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে। তার পর থেকেই তৃণমূলের অন্দরে চলছে নানা জল্পনা। এর মধ্যে বিধানসভায় দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বুঝিয়ে দিলেন শুধু অভিষেক নয়, তার সঙ্গে অভিষেকের হাত ধরে আসা আইপ্যাক সংস্থাকেও বিদায় জানাতে চলেছেন তিনি।
সূত্রের বৈঠকে মমতা বলেন, ‘প্যাক – ফ্যাক বুঝি না। এসব করে আমার কাছে অনেক ভুল তথ্য এসেছে। এবার থেকে আমার কাছে যে তথ্য আসবে তা দিয়েই দল চলবে।’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূলের ফল আশানুরূপ না হওয়ার পর আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি করে শাসকদল। শুধু চুক্তি নয়, আইপ্যাকের তৎকালীন কর্ণধার প্রশান্ত কিশোরকে দলীয় পদও দেয় তৃণমূল। এর পরই রাজ্যে চালু হয় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। যে প্রকল্প ২০২১ সাল ও তার পরবর্তী নির্বাচনগুলিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যাপক সাফল্য এনে দেয়। যার ফলে অভিষেকের নেতত্বের ওপরে আস্থা জন্মাতে শুরু করে তৃণমূলের একাংশের। ওদিকে অভিষেককে দলের সাধারণ সম্পাদক করে তাঁকে রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী করার বার্তা দেন মমতা। যার জেরে দলে ক্রমশ বাড়তে থাকে অভিষেক অনুগামীদের সংখ্যা। যার জেরে দলের সংগঠন দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাচ্ছিল বলে মনে করছে তৃণমূলেরই একাংশ। শেষ বেলায় রাশ ধরে আপাতত দলকে সেই বিপদের হাত থেকে বাঁচালেন মমতা।
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, খয়রাতি প্রকল্প চালিয়ে কী ভাবে ভোট বাক্স ভরতে হয় তা গত কয়েক বছরে শিখে ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইপ্যাকের বহু কর্মীকে তিনি দলের কর্মী হিসাবে বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়োগও করেছেন। ফলে আলাদা করে আইপ্যাককে আর দরকার নেই তাঁর।