নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় সংস্থার জালে জড়িয়েছেন পার্থ ঘনিষ্ঠ মিডলম্যান প্রসন্ন রায়। নিউটাউনে প্রসন্নর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই অনেক কিছুই বাজেয়াপ্ত করেছে। বাজেয়াপ্ত হওয়া নথির মধ্যে রয়েছে দিলীপ ঘোষের নামের একটি দলিল। ৬০ পাতার সেই দলিল খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, এই প্রসন্ন রায়ের মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির টাকা তোলা হত বলে অভিযোগ সিবিআই। এই আবহে এবার সেই প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে দিলীপ ঘোষের দলিল মেলায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রসন্নর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসের তালিকা বা সিজার লিস্টের আট নম্বর আইটেমটি হল এই দলিল। সৌভিক মজুমদার এবং দিলীপকুমার ঘোষের মধ্যে ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল একটি ডিড হয়েছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি জমি কেনাবেচার ডিড সেটি। জমিটি সৌভিক মজুমদারের থেকে কিনেছেন দিলীপ ঘোষ।
প্রশ্ন উঠেছে, দিলীপ ঘোষের কেনা জমির দলিল কেন পার্থ ঘনিষ্ঠ মিডলম্যানের বাড়িতে? প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে পরিচিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি। প্রসন্নর সঙ্গে পরিচয় থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বিজেপি সাংসদে বক্তব্য, ‘আমার ওই কমপ্লেক্সে ফ্ল্যাট ছিল। ইলেকট্রিক কানেকশনের জন্য দলিল দিয়েছিলাম। আগে পরিচয় ছিল। ও যে অন্য কোনও কাজে যুক্ত, জানতাম না।’
উল্লেখ্য, প্রসন্নর বাড়ির সিজার লিস্ট আদালতে জমা দিতে সময় লাগিয়েছিল সিবিআই। সিজার লিস্ট জমা না দেওয়ার বিষয়টি আদালতে উত্থাপিত করেছিলেন এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা। এরপর সিবিআই আদালতে এই সিজার লিস্ট জমা দিয়েছিল। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে যে দিলীপ ঘোষের দলিলও উদ্ধার হয়েছে পার্থ ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে। এদিকে গত ২৬ অগস্ট নিউটাউন থেকে সিবিআই গ্রেফতার করে প্রসন্নকুমার রায়কে। এক সময় রং মিস্ত্রি ছিলেন তিনি। সেই প্রসন্নই পরবর্তীকালে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন। অভিযোগ, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয়ের পরই ভাগ্য খোলে তাঁর। এহেন প্রসন্নর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের যোগ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।