মাওবাদীদের মৃতদেহের প্রতি মমতার সম্মান রয়েছে কিন্তু করোনায় মৃতদের দেহের প্রতি ন্যূনতম সম্মানটুকু নেই। গড়িয়া শ্মশানের ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে মন্তব্য দিলীপ ঘোষে। বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই নিয়ে সরব হন দিলীপবাবু। সঙ্গে তাঁর দাবি, পরিচয় গোপন করতে করোনায় মৃতদের লুকিয়ে রাখা দেহ অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘খুবই ভয়ঙ্কর, নির্মম, অমানবিক ঘটনা। ১৩টা লাশ প্রায় গলে গেছে। গড়িয়ার একটা শ্মশানে সেগুলো রাখা ছিল। আমরা তো বুঝতে পারছি না শ্মশানে কেন লাশ রাখা আছে। মৃতদেহ ও মর্গে থাকার কথা। সেখানেই সুরক্ষিত থাকবে। কী রহস্যজনক কারণে সেগুলি শ্মশানে রাখা ছিল?,
দিলীপবাবুর দাবি, ‘ওই ভিডিয়ো দেখে মানুষের রাগ হচ্ছে। যে মৃতদেহের প্রতি এই অপমান কেন? হুক দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শরীরের থেকে চামড়া খসে পড়ছে। মাস খানেকের বেশি পুরনো সেই লাশ। এভাবে আমরা লাশ রাখতে কোথাও দেখিনি।‘
বিজেপির রাজ্য সভাপতির প্রশ্ন, ‘এই ভিডিয়ো যারা দেখছেন সবার মনের মধ্যে একটা আত্মগ্লানি আসছে। যে মৃতদের সামান্য সম্মান আমরা দিতে পারি না?’
তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের করোনার লাশ চুরির অভিযোগ এনে দিলীপবাবু বলেন, ‘মৃতের সংখ্যা কম দেখাতে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে। আমি আগেই বলেছিলাম, নন্দীগ্রামে সিপিএম লাশ চুরি করেছিল আর টিএমসি আজকে করোনার লাশ চুরি করছে। সংবিধানে মৃতদেহের প্রতি যে সম্মান দেখানোর কথা বলা রয়েছে তার ধারকাছ দিয়ে যায়নি এই সরকার।‘
মমতাকে দিলীপ ঘোষ মনে করান, ‘২০১০ সালে লালগড়ে এক অপারেশনে মৃত মাওবাদীদের দেহ বাঁশে বেঁধে নিয়ে গিয়েছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তাই নিয়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গ অচল করে দিয়েছিলেন মমতা। মাওবাদীদের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে শ্রদ্ধা ছিল রাজ্য সরকারের অপদার্থতার জন্য করোনায় মৃতদের প্রতি তার লেশমাত্র নেই। এটাই কি এগিয়ে বাংলা? আর ইনিই বাংলার গর্ব মুখ্যমন্ত্রী? শত্রুর মৃতদেহের প্রতিও কেউ এভাবে অসম্মান করে না।‘
দিলীপ ঘোষের চাঞ্চল্যকর দাবি, ‘সম্ভবত লাশগুলো অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই শরীরের মাংস খুলে পড়েছে। পরিচয় লুপ্ত করতে এই কাজ করেছে সরকার। এই ধরণের অমানবিক ব্যবহার একটা সরকার কী করে করতে পারে? করোনায় মৃতদের দেহ লুকাতে গিয়ে এই কাজ করেছে সরকার।‘
বলে রাখি, বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় গড়িয়া শ্মশানের একটি ভিডিয়ো। তাতে দেখা যায় মৃতদেহের চোয়ালে হুক বাঁধিয়ে শববাহী গাড়িতে তুলছেন এক ব্যক্তি। এই ঘটনায় জনমানসে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। টুইট করে বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে জবাবদিহি তলব করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।