রাজ্যের রেশন ব্যবস্থায় ব্যাপক অব্যবস্থার অভিযোগ তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের বাসভবনের সামনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকারকে বেঁধেন তিনি। তাঁর দাবি, কেন্দ্র সময় মতো রেশন সামগ্রী পাঠালেও তা বণ্টন করছে না রাজ্য সরকার। উলটে শাসকদলের দুর্নীতির জেরে গরিব মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ‘১ মে থেকে কেন্দ্রের রেশন চালু করার কথা ছিল। আর ১৫ এপ্রিলের আগে FCI-এর জোনাল ম্যানেজার আমাকে জানিয়েছিলেন প্রায় ৪.৫ লক্ষ টন চাল ও ৫ লক্ষ টন গম এসে গিয়েছে। যেহেতু গম দেওয়ার কথা সরকারের। কোন ডাল কতটা লাগবে তা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাতে পারেনি রাজ্যের খাদ্য দফতর। তাও ৪৫ হাজার টন ডালের মধ্যে ১৪ হাজার টন এসে গিয়েছিল। সেই ডাল ১ মাস মানুষকে দেওয়াই যেত।’
রেশনে ডাল দেওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি নিয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘এখানকার খাদ্যমন্ত্রী বললেন, চাল-গম তো এসেছে। ডাল কোথায় দেব কী করে? যেই ডাল এসে গেল এখন বলছে আমরা তিন মাসের ডাল একসঙ্গে দেব। ফলে এখানকার সরকার ঠিক করুক সরকার কী করবে।’
পশ্চিমবঙ্গ বাসীর জন্য কেন্দ্রের পাঠানো চাল রাজ্য সরকার নিতে চাইছিল না বলে অভিযোগ করেন দিলীপ। বলেন, ‘কেন্দ্রের পাঠানো চাল এখানকার সরকার নেয়নি। কারণ আমাদের এখানকার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তো ৬ কোটি লোককে দেয়। আমি আরও আড়াই কোটি লোককে দিই। সেজন্য ২,০০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা আমি কোথায় পাব? সেটা আপনি দিচ্ছেন আপনি বুঝুন।’
মুখ্যমন্ত্রীকে দিলীপের কটাক্ষ, ‘আপনি বলেন, ৯০ শতাংশ লোককে ২ টাকা কিলো দরে চাল খাওয়াই। আপনি লোককে গরিব ভিখারি করে রেখেছেন। আর পচা চাল খাওয়াচ্ছেন। আপনি যদি দিতে না পারেন সেটা আপনার দায়।’
দিলীপবাবুর দাবি, ‘কেন্দ্রীয় সরকার পর্যাপ্ত চাল পাঠিয়েছে। রাজ্য সরকার নিচ্ছে না। মাননীয় রাজ্যপালকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। তার পর কেন্দ্রের পাঠানো চাল নিতে রাজি হয়েছে রাজ্য সরকার। আর চাল দেরিতে নিয়েছেন বলে দেরিতে দেওয়া শুরু হয়েছে। অনেকে পাননি। সেই নিয়েও গন্ডগোল হয়েছে।’
রেশনে অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘প্রায় ৪০০ – ৪৫০ রেশন ডিলারকে শো কজ করতে হয়েছে। লাইসেন্স ক্যান্সেল করতে হয়েছে। ৪০ জনকে গ্রেফতার করতে হয়েছে। কেন? কারণ তাদের পার্টির লোকেরা ডিলারদের কাছ থেকে ধমকে-চমকে চাল ডাল গম তুলে নিয়েছেন। তার পর পার্টির নামে বিলি করেছেন। পার্টির লোককে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। যেখানে গন্ডগোলের ভয় সেখানে দোকানটা বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে ৫,০০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’