এতদিন রাজ্য সরকার কেন প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি চালু করেনি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন বিজেপির প্রথমসারির নেতা–নেত্রীরা। স্বপ্ন ফেরি করতেন ক্ষমতায় এলে বাংলায় এই প্রকল্প চালু করা হবে। তবে প্রকল্প রাজ্যে চালু হয়েছে, কিন্তু ক্ষমতায় আসেনি বিজেপি। বরং ২০০–র বেশি আসন নিয়ে হ্যাট্রিক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরেই এই প্রকল্প চালু করতে ছাড়পত্র দিয়েছেন। এবার ঠিক ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পে কৃষকদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যে দুর্নীতি হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি করল রাজ্য বিজেপি। এমনকী এই কারণ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বাংলার কৃষকদের আপাতত পরবর্তী কিস্তির টাকা দেওয়া বন্ধ করার আর্জি জানালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আবার সঠিক তালিকা তৈরির জন্য রাজ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দল পাঠানোর দাবিও জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে না পেরে এই পদক্ষেপ করা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। সেই চিঠিতে কী কী ধরনের দুর্নীতি হতে পারে তার নানা আশঙ্কা কথা তুলে ধরা হয়েছে। এমনকী রাজ্যের পাঠানো কৃষকদের তালিকা যেন ভাল করে পরীক্ষা করা হয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। আর সেটা না হওয়া পর্যন্ত পরের দফার টাকা পাঠানো বন্ধ রাখতে বলেছেন। যা সরাসরি কৃষকদের উপর কোপ বলে মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগ নেওয়ায় চলতি মাস থেকেই রাজ্যে এই প্রকল্প চালু হয়েছে। প্রথম দফার টাকা পেয়েছেন প্রথম দফায় নথিভূক্ত বাংলার কৃষকরা। নরেন্দ্র মোদীকে পাঠানো চিঠিতে দিলীপ দাবি করেন, রাজ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে ২৩ লাখ কৃষক নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন করলেও প্রথম দফার টাকা পেয়েছেন মাত্র ৭ লাখ চাষি। বাকি কৃষকদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়নি বলে দাবি দিলীপের। যদিও তার কোনও প্রমাণ তিনি পেশ করেননি।
আবার দিলীপ ঘোষ চিঠিতে লিখেছেন, এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক হলেও তা বাংলার ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ হবে না। কারণ এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সহযোগিতায় অনেক অনুপ্রবেশকারীর কাছেও আধার কার্ড রয়েছে। আপাতত টাকা পাঠানো বন্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের পাঠানো তালিকা পরীক্ষা করে দেখা হোক। দিলীপের দাবি, প্রকৃত গরিব কৃষকরা যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পায় তাই তাঁর এই চিঠি। কিন্তু কৃষকদের বঞ্চিত করতে এই চিঠি বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ গ্রামীণ কৃষকরা বিজেপিকে ভোট দেয়নি। তাই তাঁদের এই প্রকল্প দেওয়ার মানে হয় না। সেইজন্য এই চিঠি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।