ভাষা দিবসের আগে কলকাতায় হিন্দির ‘দাপাদাপি’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন দীপ্সিতা ধর। সিপিআইএম নেত্রী দাবি করলেন, এখন এমন অবস্থা হয়ে গিয়েছে যে কলকাতায় নেমে ট্যাক্সি খুঁজতে গেলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে হিন্দিতে জবাব মিলবে। বিমানবন্দরে হিন্দিতে বোঝানো হবে। পুরো বিষয়টা এমন হয়ে গিয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গে দাঁড়িয়ে বাংলায় কথা বলাটাই যেন অপরাধ। সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারকেও আক্রমণ শানিয়ে দীপ্সিতা দাবি করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কারণেই পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক বাংলা মাধ্যমের স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাঙালিদের বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যেতে হচ্ছে। অথচ সেই তৃণমূলই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছে বলে কটাক্ষ করেন দীপ্সিতা। তাঁর কথায়, ‘আসলে বাংলা ভাষার এটাও একটা মজা, বাঙালি মেরেও জয় বাংলা বলে যাওয়া যায়।’
‘….৯০% ক্ষেত্রে হিন্দিতে উত্তর আসবে’
আর আগামী শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভাষা দিবসের আগে সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে দীপ্সিতা বলেন, ‘কলকাতায় নেমে ট্যাক্সি খুঁজতে চাইলে ৯০ শতাংশ সময় ওপারের ড্রাইভার হিন্দিতে জবাব দেবেন। আপনি বাংলায় বললেও ওপার থেকে জবাব আসবে হিন্দিতে। ব্যাপারটা এমন যেন আপনিই পশ্চিমবঙ্গে হিন্দি না বলে অপরাধ করে ফেলেছেন।'
আরও একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে দীপ্সিতা বলেন, 'এই রোগ শুধু হিন্দিভাষীতেই সীমাবদ্ধ নেই। এয়ারপোর্টের লাইনে দাঁড়িয়ে একটি ধোপদুরস্ত মেয়ে ডিজিযাত্রা বোঝাচ্ছে হিন্দিতে, আমি সচেতনভাবেই তাকে বাংলায় প্রশ্ন করি। মেয়েটি হিন্দিতে জবাব দেয়। তুমি বাংলা জানো না? প্রশ্ন করায় স্পষ্ট বাংলায় সে জানায় সে বাঙালি। তবে হিন্দিতে বলছে কেন?’
‘মাথার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে যে হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা’
কেন এমনটা হচ্ছে, সেটারও একটা কারণ ব্যাখ্যা করেছেন দীপ্সিতা। তিনি দাবি করেন, ‘আসলে মাথার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে যে হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা, ভারতের ইউনিভার্সাল ভাষা, কাজের ভাষা। অথচ আমাদের মতো বহুভাষী দেশে কোনও ভাষার আরোপিত সমসত্বতা আসলে আগামীর সাংস্কৃতিক, ধার্মিক এবং অবশ্যই রাজনৈতিক সমসত্বতার প্রাথমিক সোপান। তাতে আদতে লাভ কার হয়, আমরা সকলেই তা জানি।’
সিপিআইএমের শীর্ষনেতারা কবে বুঝবেন দীপ্সিতার কথা? এল কটাক্ষ
আর দীপ্সিতার পোস্ট নিয়ে সিপিআইএমকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘দীপ্সিতা বাস্তবতা বুঝেছেন। তাই এই পোস্ট করতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু সিপিএমের কয়েকজন নেতা এখনও বাঙালি জাতীয়তাবাদের মধ্যে প্রাদেশিকতার জুজু দেখেন। বাংলা জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলিকে তৃণমূলের বি-টিম বলে দাগিয়ে দেন।’ সেইসঙ্গে তিনি কটাক্ষ করে বলেন, 'প্রশ্ন হল, সিপিএমের পক্ককেশ নেতা-নেত্রীরা কি দীপ্সিতার এই পোস্টে কে মান্যতা দেন?'