আরজি করের ঘটনা শুধু রাজ্য সরকারের উপর নয়, দল হিসাবে তৃণমূলকেও নানা অস্বস্তিতে, নানা বিড়াম্বনায় ফেলেছে। এদিকে দলীয় স্তরে নানা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল। তবে দলীয় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনই এনিয়ে সংস্কারের কাজ করতে চাইছেন না। এমনকী পরামর্শদাতা সংস্থা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সমীক্ষার কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে সেই কাজেও লাগাম টেনেছেন খোদ দলের সুপ্রিমো। সূত্রের খবর।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আরজি করের ঘটনা কার্যত দলের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। ঘনিষ্ঠমহলের দলীয় নেতৃত্বের একাংশ আরজি করের ঘটনায় রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এমনকী সুখেন্দু শেখর রায়, জহর সরকারের মতো একাধিক নেতা প্রকাশ্যেই এনিয়ে মুখ খুলেছিলেন। এতে অস্বস্তি আরও বেড়েছিল তৃণমূলের।
সূত্রের খবর, পরামর্শদাতা সংস্থা বিভিন্ন শহরাঞ্চলে পুরপ্রধানদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছিল। সেই মতো সমীক্ষার কাজও শুরু হয়েছিল। কোনও পুরপ্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হলে সেই জায়গায় কাকে নেওয়া হবে তা নিয়েও খোঁজখবর নিচ্ছিল পরামর্শদাতা সংস্থা। তবে এবার সেই কাজে লাগাম টানা হয়েছে। এখনই যাতে এই কাজ করা না হয় সেব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন এই কাজে লাগাম টানা হচ্ছে?
মূল সমস্যাটা হল এখনই এই ধরনের সমীক্ষার কাজ করলে তা দলের একাংশের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। যেটা সামাল দেওয়াটা সমস্যার হয়ে যাবে। একদিকে আরজি করের ঘটনা। সেটা এখনও পুরোপুরি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে যদি এখনই দলীয় স্তরে সমীক্ষার কাজ করা হয় তবে তাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। সেকারণেই এই উদ্যোগ। কার্যত ধীরে চলো নীতি চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কারণ ক্ষত সামাল না দিয়ে এখনই যদি এনিয়ে তাড়াহুড়ো করা হয় তবে তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
তবে সূত্রের খবর, দলের অন্দরে যে সংস্কার করা হবে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু এনিয়ে দলের অন্দরেই নানা টানাপোড়েন শুরু হয়। তবে এখনই এনিয়ে তড়িঘড়ি কোনও পদক্ষেপ নিতে চাইছেন না খোদ মমতা। ধীরে সুস্থে কাজ করার পক্ষপাতি তিনি। এমনটাই সূত্রের খবর।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে বর্তমানে তৃণমূল আরজি কর ক্ষত মেরামতির উদ্যোগ নিচ্ছে। আগে আরজি কর ক্ষত মেরামতি, তারপর শহরাঞ্চলে দলে রদবদল। কারণ দেখা গিয়েছে আরজি করের ঘটনার জাস্টিস চাইতে যে ধরনের মিছিল হয়েছিল তার বেশিরভাগটাই শহর কেন্দ্রিক।