পয়লা এপ্রিল থেকে গার্হস্থ্য ১৪.২ কিলোগ্রাম এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ওপর ১০ টাকা করে ছাড় পাবেন গ্রাহকেরা। বিধানসভা নির্বাচনের আবহেই গ্রাহকদের স্বস্তি দিল ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (আইওসি)। বর্তমানে গার্হস্থ্য গ্যাস সিলিন্ডার পিছু দাম রয়েছে ৮১৯ টাকা। পয়লা এপ্রিল থেকে তা ১০ টাকা কমে ৮০৯ টাকায় দাঁড়াবে। ৩১ মার্চ রাত ১২টার পর থেকে অর্থাৎ আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কার্যত এই দাম কার্যকরী হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত এই তেল বিপণনকারী সংস্থা।
প্রতি মাসের প্রথম দিনে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম পরিবর্তন করে তেল কোম্পানিগুলো। গত ২০২০’র ডিসেম্বরে দু'দফায় গার্হস্থ্য ১৪.২ কিলোগ্রাম এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেড়েছিল ১০০ টাকা। ফলে এবছর রান্নার গ্যাসের দাম কী হবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন মধ্যবিত্তরা।
এমনিতেই বাজারে জিনিসপত্রের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। সেই পরিস্থিতিতে রান্নার গ্যাসের দাম বাড়লে, তা সরাসরি প্রভাব ফেলে মধ্যবিত্তের রান্নাঘরে।
গত ১ জানুয়ারি থেকে কলকাতায় গার্হস্থ্য ১৪.২ কিলোগ্রাম এলপিজি সিলিন্ডারের দাম একই থাকেছে। অর্থাৎ, ৭২০ টাকা ৫০ পয়সা। তবে ১৯ কিলো নন-ডমেস্টিক সিলিন্ডারের দাম ২২ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে হয়েছিল ১,৪১০ টাকা। জানুয়ারিতে সিলিন্ডার নিলে ভর্তুকি বাবদ গার্হস্থ্য গ্রাহকরা কত টাকা পাবেন, সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী সংস্থাগুলি। তারপরেই মাঝে মাত্র এক মাসের বিরতি। ডিসেম্বরের পুনরাবৃত্তি ঘটে ফেব্রুয়ারিতে। ১০ দিনের ব্যবধানে দু'বার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে তেল কোম্পানিগুলি।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলির তরফে রান্নার গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা করা হয়। তাতে দেখা যায়, ১৪.২ কিলো গার্হস্থ্য ভর্তুকিহীন এলপিজি সিলিন্ডারের দাম এক ধাক্কায় ৫০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৯৫ টাকা ৫০ পয়সা। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সিলিন্ডারের দাম আরও ২৫ টাকা বাড়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী সংস্থাগুলি। ফলে, মোট দাম বাড়ে ৭৫ টাকা।
তবে ভর্তুকি বাবদ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে কত টাকা ঢুকবে, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলো। উল্লেখ্য, বিগত কয়েক মাস ধরেই তেল কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা নিয়ে কোনও তথ্য জানাচ্ছে না। যদিও এই পর্যায়ে ১৯ কিলো ওজনের বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের দাম ৯ টাকা ৫০ পয়সা হ্রাস করা হয়। যার ফলে নতুন দাম দাঁড়ায় ১,৫৮৯ টাকা।
প্রসঙ্গত, গত বছরই জানা গিয়েছিল, সপ্তাহে সপ্তাহে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম পরিবর্তন করার বিষয়ে সরকারি স্তরে চিন্তাভাবনা চলছে। বিশ্ব বাজারে প্রতিদিন জ্বালানির দাম বাড়ে। আন্তর্জাতিক বাজারে দামের এই ওঠা-পড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি সপ্তাহে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম স্থির করতে চাইছে তেল কোম্পানিগুলো। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন কোম্পানির পদস্থ কর্তারা। তবে ভোটের সময় এই ঘোষণা স্বস্তি দিল মধ্যবিত্তদের।