একুশের নির্বাচনের রেশ এখনও টাটকা হয়ে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত ‘মেজ বোন’ নন্দীগ্রামে। কারণ সেখানে সেতু উপহার দেবেন বলে একুশের নির্বাচনের আগে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেখানে তিনি পরাজিত হয়েছেন। এখন তিনি ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখনও অবশ্য সেতু তৈরির কাজও শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বন্দরশহর হলদিয়ার সঙ্গে নন্দীগ্রামকে সেতুর মাধ্যমে জুড়তে কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নীতীন গড়কড়ির সঙ্গে দেখা করেছেন। তাই একুশের নির্বাচনের পরও ফের সরগরম নন্দীগ্রামের জোড়াফুল এবং পদ্মফুলের রাজনীতি।
বুধবার শুভেন্দু অধিকারী নয়াদিল্লিতে সাক্ষাৎ করেন কেন্দ্রীয় সড়ক–পরিবহণমন্ত্রী নীতীন গডকড়ির সঙ্গে। এমনকী বৈঠকের পর শুভেন্দু দু’জনের ছবি পোস্ট করে টুইটারে লিখেছেন, ‘নীতীন গডকড়ির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। আমি তাঁকে নন্দীগ্রাম–হলদিয়া সেতু এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের অগ্রগতি নিয়ে অনুরোধ করেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, এই বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।’ অর্থাৎ শুভেন্দু এখন দেখাতে চাইছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক হয়ে তিনি কাজ করছেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে যাওয়ায় তিনি এখানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছেন না।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে নন্দীগ্রামের তেখালিতে গিয়ে সভা করেছিলেন মমতা। সেখানেই তাঁকে হুগলি নদীর উপর হলদিয়া–নন্দীগ্রামের মধ্যে সেতু তৈরির কথা বলতে শোনা গিয়েছিল। এমনকী গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় অন্তর্বর্তী বাজেটে হলদি নদীর উপর সেতু তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে হলদিয়া–নন্দীগ্রামবাসী খুশি হয়। কিন্তু এখন যুযুধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সংঘাতে সেতু নির্মাণ প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।
এখন যে বিষয়টি সামনে আসছে তা হল, এই সেতু তৈরি করা হলেও তা শেষ হবে যেখানে সেটি অন্তর্দেশীয় জলপথের সীমানার মধ্যে পড়ছে। সুতরাং সেতু তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন লাগবে বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের দাবি, সেতু নির্মাণের অনুমতি নিতেই শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেতুর আসল রূপকার মুখ্যমন্ত্রীই। এই বিষয়ে নন্দীগ্রাম–১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বাজেট ঘোষণা করেছেন সেতু হবে। সেতু তৈরির আগে মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের কাজকর্ম হয়ে গিয়েছে। তাই নতুন করে সেখানে অন্য কেউ আর সেতু তৈরির কাজ করতে পারবেন না। তবে এলাকার বিধায়ক হয়তো কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে যে অনুমতি লাগে, তা জোগাড় করার চেষ্টায় গিয়েছিলেন।’