অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অস্ত্রোপচার হয়েছিল রোগীর। কিন্তু, সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে ক্রমেই রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং শেষে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতি অভিযোগ খুঁজে পেয়েছিল পরিবার। এরপরেই হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবার। শেষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকের গাফিলতি খুঁজে পেয়ে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, সুনিতা জয়সওয়াল নামে ওই রোগী অ্যাপেন্ডিসাইটিসের যন্ত্রণা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৫ মে বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর দুদিন পর তার মাইক্রোসার্জারি করা হয়। কিন্তু, তার পরের দিন রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকদের কাছ থেকে তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন যে অস্ত্রোপচারের সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। সেই কারণে তিনি সম্পূর্ণ অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। এরপর একবালপুর থেকে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় ঠাকুরপুকুরের একটি হাসপাতালে। অবশেষে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় বেহালার ওই হাসপাতালের অস্ত্র পাচারকারীরা এবং অ্যানাস্থেটিস্টের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলে পরিবার।
কলকাতা (দক্ষিণ) জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলার শুনানি হয়। কিন্তু, এরই মধ্যে চিকিৎসকরা রাজ্য এমনকি জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের দ্বারস্থ হন। মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তারা। তাদের দাবি ছিল, মৃতার বোন এই মামলা করেছেন। তিনি যেহেতু পরিবারের সদস্য নন তাই এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়।
যদিও তাদের যুক্তি আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। এরপর কলকাতা (দক্ষিণ) ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের প্রেসিডেন্ট শশীকলা বসুর বেঞ্চ হাসপাতালের ২ চিকিৎসক, সুপার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। এরমধ্যে ১৫ হাজার টাকা নাবালক ছেলেকে দিতে হবে এবং সুনিতার হয়ে যেহেতু ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছিলেন তার বোন নীতা সিং। তাই তাকে বাকি টাকা দিতে হবে।