তৃণমূল কংগ্রেসে যেভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান হচ্ছে, তা অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। একইসঙ্গে অভিষেক এবং ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর মিলে যেভাবে জেলার নেতাদের কাজে ‘হস্তক্ষেপ’ করছেন ও পরিবর্তন করছেন তাতে সুবিধা পাচ্ছে বিরোধী শিবির বিজেপি। তৃণমূল নেতাদের একাংশের এই মত বলে খবর।
সম্প্রতি এই জুটির সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকার করে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী, বিধায়ক মিহির গোস্বামী। শনিবার একই সুরে বিদ্রোহের সুর ধরেছেন কলকাতা পুরনিগমের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তাঁরা কেউই অভিষেকের কর্তৃত্ব ও প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ মেনে নিতে রাজি নন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক শীর্ষ রাজ্য কমিটির নেতা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে বলেন, ‘শুক্রবার দলনেত্রী ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলার এবং রাজ্যের নেতাদের বলেছেন, দলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। এমনকী বিজেপিকে যাঁরা ভয় পাচ্ছেন তাঁদেরকেও দল থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম তৈরি রয়েছে দায়িত্ব নেওয়ার জন্যও।’ এটাই অনেককে চাপে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এদিকে আগামিকাল মেদিনীপুরে সভা রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। সেখানে তিনি দল ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারেন বলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। ঠিক তার পরেরদিন সভা রয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সুতরাং বিধানসভা নির্বাচনের আগে সরগরম হয়ে উঠতে চলেছে রাজ্য–রাজনীতি।
ইতিমধ্যে দল ছেড়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল রায়। তাঁরা এখন বিজেপিতে। আগামী ৮ ডিসেম্বর রাজ্যে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি সেদিন অভিষেক বন্দ্যোপাদ্যায়ের কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারে সভা করবেন। আর কলকাতায় সভা করবেন ৯ তারিখ। সেখান থেকে কোন বার্তা তিনি দেন এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
এই বিষয়ে বিজেপির সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘কংগ্রেসের মতো অবস্থা হতে চলেছে তৃণমূলের। কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকে শীর্ষে বসাতে চায়। কিন্তু তার সেই কাজ করার যোগ্যতা নেই। তেমনই তৃণমূল কংগ্রেস অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দ্বিতীয় মুখ করতে চাইছে। কিন্তু সে কোনওদিন গণ–আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেননি বা অবদানও নেই।’