পথ দুর্ঘটনায় ভয়ঙ্করভাবে যুবকের শরীরে গেঁথে গিয়েছিল কাঠ। কার্যত যুবকের ফুঁড়ে গিয়েছিল সেটি। তাতে যুবকের কিডনি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই অবস্থার মধ্যেও দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের পর কাঠ বের করে যুবকের প্রাণ বাঁচাল এসএসকেএম হাসপাতাল। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন ওই যুবক। তাঁর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: ডানদিকে হৃৎপিণ্ড, সফল বাইপাস সার্জারি করে নজির গড়ল কলকাতার হাসপাতাল
জানা গিয়েছে, যুবকের নাম সমরজিৎ ঘোষ। তিনি হাসনাবাদের বাসিন্দা। পেশায় স্কুল গাড়ির চালক। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বসিরহাটের মালঞ্চ সেতুর উপরে তিনি পথদুর্ঘটনার কবলে পড়েন। স্কুল গাড়ি মেরামত করে ফেরার পথে একটি লরির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে তাঁর ছোট গাড়ির। সেই সময় লরির কাঠামোর একটি কাঠের অংশ ভেঙে যায় এবং গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে চালকের আসনে বসে থাকা ওই যুবকের পেটে ঢুকে যায়। প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা ওই কাঠের টুকরোটি যুবকের পেট দিয়ে ঢুকে গিয়ে সেটি পিঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছিল। তবে সেই অবস্থার মধ্যে যুবক বেঁচেছিলেন।
খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় মিনাখাঁ থানার পুলিশ ও ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা। তবে পেটে কাঠ ঢুকে যাওয়ায় যুবককে গাড়ি থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় পুলিশকে। পরে পুলিশ কর্মীরা অবশেষে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় পিজিতে। সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দিকে কাত করে শুইয়ে যুবকের অস্ত্রোপচার করা হয়। শল্য বিভাগের প্রধান চিকিৎসক বিতান চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অন্যান্য চিকিৎসকদের দল এই অস্ত্রোপচার করেন। জানা গিয়েছে, ওই কাঠটি প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা, ছ’ইঞ্চি চওড়া এবং দেড় ইঞ্চি মোটা। যুবকের পুরো পেট কেটে পরে সেটি বের করা হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার ফলে সমরজিতের অগ্ন্যাশয় একেবারে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। এছাড়া, ডান দিকের কিডনি, যকৃৎ, প্লুরা, পাকস্থলী, ডায়াফ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সমস্ত অঙ্গগুলিও মেরামত করা হয়েছে। কিডনির আঘাতের কারণে তাঁর চিকিৎসা চলেছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এখন যুবক নিজে থেকেই উঠে বসতে পারছেন এবং খেতে পারছেন। আপাতত তাঁকে নজরদারিতে রেখেছেন চিকিৎসকরা।