দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম কোনও বড় সভায় বক্তব্য রাখলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা আবহে একুশের শহিদ স্মরণে এই সভা ছিল ভার্চুয়াল। ফলে বক্তব্য দীর্ঘায়িত করারও সুযোগ ছিল। কিন্তু দেখা গেল অভিষেক মাত্র পাঁচ মিনিট বক্তব্য রাখলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চিন্তাভাবনা করেই কম সময়ে বক্তব্য রাখার কথা ভেবেছেন অভিষেক। যেহেতু বিজেপিকে রুখতে জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, তাই তাঁকে জায়গা করে দিতেই অভিষেকের এই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই যদি কারও নাম দলে উচ্চারিত হয়ে থাকে, তবে তিনি হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয় রাজনীতিতেও অভিষেকের গুরুত্ব আগের তুলনায়্ অনেকটাই বেড়েছে। গত বিধানসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিষেককে ভাইপো বলে সম্বোধন করে একাধিকবার আক্রমণ করেছেন। ‘ভাইপো’ বলতে কাকে বোঝানো হয়, সেটা সারা দেশবাসী গত বিধানসভা ভোট থেকে বুঝে গিয়েছেন। অভিষেকের জনপ্রিয়তা বাড়তেও একুশের শহিদ স্মরণের মঞ্চে সারা দেশের মানুষকে বার্তা দিতে যুবরাজ কিন্তু বেশি সময় নেননি। বেশিরভাগ সময়ই ছেড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। কারণ, অভিষেক জানতেন, দেশের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনতেই বেশি আগ্রহী। সারা দেশের বিজেপি বিরোধী নেতা–নেত্রীরা যেখানে বসে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনার জন্য সেখানে অভিষেকের বক্তব্য তাঁরা যে শুনবেন না, সেটা ভালোভাবেই জানতেন তিনি। সে কথা কথা মাথায় রেখেই গুনে গুনে পাঁচ মিনিট ব্যয় করলেন বক্তব্য রাখার জন্য। তাঁর বক্তব্যে অভিষেক তুলে ধরলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিজেপি বিরোধী শক্তিকে পথ দেখাতে পারেন।
এদিকে জানা গিয়েছে, গতকালের দলীয় কর্মসূচি শেষ করেই দিল্লি উড়ে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে গিয়ে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার কথা। দু–একদিনের মধ্যেই দিল্লিতে গিয়ে পৌঁছোবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন দেখার বাদল অধিবেশনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের পরবর্তী রণকৌশল কী হয়। সেইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে বিজেপি বিরোধী শক্তি একত্রিত হয় কিনা, সেই বিষয়টিও সবার নজরে থাকবে।