গেরুয়া পোশাক পরবেন না। তিলক কাটবেন না। কপালে সিঁদুর পড়বেন না। মাথা ঢেকে রাখবেন। প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশের সন্ন্যাসী এবং ভক্তদের এমনই পরামর্শ দিল ইসকন কলকাতা। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র রাধারমণ দাসের মতে, এখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি, তাতে আগে জীবন বাঁচানোর উপরে জোর দিতে হবে। সেটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। থাকতে হবে সুরক্ষিত। আর সুরক্ষিত থাকার জন্য আপাতত হিন্দু সন্ন্যাসী এবং ভক্তদের গেরুয়া পোশাক এড়িয়ে যাওয়ার মতো পরামর্শ দিয়েছেন। যাতে বোঝা না যায় যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিন্দু বা ইসকনের ভক্ত।
কী কী আর্জি জানানো হয়েছে ভক্তদের?
তাঁর কথায়, 'এই সংকটের মুহূর্তে আমি সব সন্ন্যাসী এবং ভক্তকে পরামর্শ দিচ্ছি যে নিজেদের রক্ষা করতে এবং সংঘাত এড়িয়ে চলতে হবে। ওঁদের গেরুয়া পোশাক পরতে এবং কপালে সিঁদুর দিতে বারণ করেছি আমি। ওঁদের যদি মনে হয় যে গেরুয়া মাল্য পরা উচিত, তাহলে এমন ভাবে পরতে হবে, যাতে কোনও পোশাকের মধ্যে সেটা লুকিয়ে রাখা যায় এবং বাইরে থেকে দেখা যায় না। যদি সম্ভব হয়, তাহলে তাঁরা যেন নিজেদের মাথাও ঢেকে রাখেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে তাঁদের সবকিছু করতে হবে, যাতে বোঝা না যায় যে তাঁরা সন্ন্যাসী।'
আর সেই ভয়টা চেপে বসেছে হিন্দু সন্ন্যাসী তথা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারির পর থেকে। বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে আক্রমণ নেমে এসেছে ইসকনের সন্ন্যাসীদের। এমনকী ইসকনের প্রায় ৬৩ জন সন্ন্যাসীকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। যাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র অভিযোগ করেছেন, গত কয়েকদিন ধরেই ইসকন সন্ন্যাসী এবং ভক্তদের লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
চিন্ময় প্রভুর সচিবকেও ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না, দাবি ইসকনের
শুধু তাই নয়, ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র দাবি করেছেন যে গত কয়েকদিন ধরে চিন্ময় প্রভুর সচিবের খোঁজ পাচ্ছেন না। তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র। তিনি দাবি করেছেন, চিন্ময় প্রভুর মামলায় কী হয়েছে, সেটা নিয়ে তাঁর সঙ্গে নিয়মিত কথা হত। সার্বিকভাবে বাংলাদেশে কী পরিস্থিতি, তা নিয়েও খোঁজখবর নিতেন।
চিন্ময় প্রভুর হয়ে দাঁড়াতে ভয় রপাচ্ছেন আইনজীবীরা?
তারইমধ্যে আজ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় প্রভুকে আদালতে পেশ করা হবে। যদিও আদালতে তাঁর হয়ে সওয়াল করার জন্য কোনও আইনজীবীকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে যে চিন্ময় প্রভুর হয়ে সওয়াল করলে ভয়ানক পরিণতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই কেউ মামলায় লড়তে চাইছেন না। যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মোতায়েন করা হচ্ছে অনেক পুলিশ।