ট্রাম থাকবে নাকি ট্রাম একেবারে উঠে যাবে এনিয়ে শহরে জোর চর্চা হয়েছে। এমনকী ট্রাম উঠে যাওয়ার জল্পনা ছড়াতেই মন খারাপ হয়েছে অনেকের। তবে ট্রাম নিয়ে এবার খুশির খবর। স্বস্তির খবর। এবার জয়রাইডের ক্ষেত্রে ট্রামকে ব্যবহার করা হবে। আর সেই জয়রাইডের ট্রাম হবে-এক বগি আর দুই ইঞ্জিন যুক্ত। অর্থাৎ এই ট্রামকে আরও ঘোরানোর প্রয়োজন নেই। যাওয়ার সময় সামনের ইঞ্জিনটি টেনে নিয়ে যাবে। আর আসার সময় অপর ইঞ্জিনটি নিয়ে আসবে। এই ট্রামটি কেবলমাত্র একটি রুটেই চলবে।
এসপ্ল্যানেড থেকে ময়দান হয়ে ভিক্টোরিয়া। এই রুটে কেবলমাত্র জয়রাইড হয়ে এই ট্রাম চলবে। বর্তমানে শ্য়ামবাজার থেকে ধর্মতলা ও গড়িয়াহাট ধর্মতলা এই দুটি রুটে যাত্রীবাহী ট্রাম চলে। অধিকাংশ রুটে আর ট্রাম চলে না। গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি ট্রাম। সেকারণে সরে যেতে হয়েছে ট্রামকে। বিশ্বের অন্যতম দূষণহীন যানবাহনের মধ্য়ে অন্য়তম হল এই ট্রাম। তবে সেই ট্রামকেই ধীরে ধীরে মুছে দেওয়া হচ্ছে কলকাতার মানচিত্র থেকে। অনেকের মতে, গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি ট্রাম। ট্রামের জেরে যানজট আরও মারাত্মক আকার নেয়। তবে ট্রামকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা যেতেই পারে।
আর সেই বিকল্প ব্যবস্থা বলতে জয় রাইডের ব্যবস্থা করা। আর সেই জয়রাইডের জন্য় ট্রামের সাইজ অনেকটাই কমে আসছে। একটি বগি আর দুটি ইঞ্জিন। অর্থাৎ যানজট হওয়ার সম্ভাবনাও কমবে এর জেরে। বিগত দিনে হাওড়া শিবপুরের ৪০ নম্বর রুটে এই ধরনের ডবল ইঞ্জিন ট্রাম চলত। এবার জয়রাইডের হাত ধরে ফিরে আসছে সেই ডবল ইঞ্জিন ট্রাম। দুদিকে মুখ। একেবারে দুমুখো ট্রাম। সামনেও চলবে। আবার পেছনের দিকে আসার সময় অন্য ইঞ্জিন।
এবার নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোতে এই দুদিকে মুখ যুক্ত ট্রাম তৈরি করা হচ্ছে। তবে এই নতুন ট্রাম এসি হবে না। একেবারে খোলা মেলা ট্রাম। হাওয়া খেতে খেতে ঘোরা যাবে কলকাতায়। যাঁরা অন্য জায়গা থেকে কলকাতায় ঘুরতে আসেন তাঁদের অনেকেই ট্রামে চড়ার স্মৃতি নিয়ে ফিরতে চান। সেক্ষেত্রে তাঁদের জন্য় এবার খুশির খবর। এবার ট্রামকে ঘিরে আবেগও থাকবে, নস্টালজিয়াও থাকবে। মন খারাপও কমবে। অসন্তোষও কমবে। এবার নতুন রূপে ফিরছে ট্রাম। এক ইঞ্জিন নয়, ডবল ইঞ্জিন ট্রাম।
তবে ট্রামকে ঘিরে আবেগ, ট্রামকে ঘিরে নস্টালজিয়া রয়েছে শহর জুড়ে। বিশ্বের অন্য়তম দূষণহীন যান বলে গণ্য করা হয় ট্রামকে। ট্রামের একাধিক ইতিবাচক দিক রয়েছে। বেঁচে থাকুক শহরের ট্রাম, দূষণ কমুক শহর জুড়ে এই দাবি বার বার উঠেছে শহরে। ট্রামপ্রেমীদের দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত শহরে আজও ট্রাম চলে।সেক্ষেত্রে কলকাতার বুক থেকে ট্রাম ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া ঠিক হবে না। কলকাতায় পুরোদমে ফিরুক ট্রাম। বরাবরের মতো কলকাতার রোজকার জীবনের অঙ্গ হোক ট্রাম, এটা চাইছেন অনেকেই।