সম্প্রতি বিশিষ্ট চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। ২৩ বছর আগে আরজি করে এক ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে জুনিয়র ডাক্তারের আন্দোলনে সামিল হওয়া অন্যতম সিনিয়র চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূল নেতা। এনিয়ে পাল্টা অস্বস্তিতে পড়লেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। এবার তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠালেন সুবর্ণ গোস্বামী।
আরও পড়ুন: 'আকাশের দিকে তাকিয়ে থুতু ফেলছেন…', দেবাংশুর 'মাওবাদী' মন্তব্যের জবাব ডাক্তারদের
জানা গিয়েছে, নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে সুবর্ণ গোস্বামী দেবাংশু ভট্টাচার্যকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। তাতে তিনি এই মন্তব্যের জন্য অবিলম্বে দেবাংশু ভট্টাচার্যকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন, না হলে তিনি মানহানি মামলা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সুবর্ণ গোস্বামী বলেছেন, ‘তৃণমূল নেতার কাছ থেকে এই চিঠির কোনও উত্তর না পেলে আমি মানহানির মামলা করব।’
আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনে এখনও উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার পর থেকে বিচার-সহ নিরাপত্তা এবং অন্যান্য দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাদের সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি সম্প্রতি ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন। তারপরই সুবর্ণ গোস্বামীকে নিশানা করেন দেবাংশু।
২০০১ সালে আরজি করের বেলগাছিয়া হোস্টেলে আত্মহত্যা করেছিলেন, এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া সৌমিত্র বিশ্বাস। তৃণমূলের আইটি সেলের তরফে দেবাংশু ভট্টাচার্যের সেই প্রসঙ্গ টেন অভিযোগ করেছিলেন, এই মৃত্যুর সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিল হাসপাতালের এসএফআই সংগঠনের তৎকালীন নেতা সুবর্ণ গোস্বামী-সহ আরও দুইজনের। ‘দুবে’, ‘গোঁসাই ঠাকুর’ ও ‘ধরবাবু’ নামে পরিচিত তিন নেতার দাপটেই একটি পরিকল্পিত হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালানো হয়েছিল হলে তিনি অভিযোগ করেন। সৌমিত্র বিশ্বাসের মা সবিতাদেবীর অভিযোগ ছিল ছেলে আরজি করের ভিতরে দীর্ঘদিন ধরে চলা পর্নোগ্রাফিক চক্রের ব্যাপারে জেনে গিয়েছিলেন। তাঁর ব্যাচের একটি মেয়ের ছবি বিকৃত করা হয়েছিল। সেই কথা মেয়েটিকে জানাতেই চক্রের পান্ডারা খবর পেয়ে যায়। এর পরেই তাঁকে খুন করে। প্রথমে পুলিশ ও পরে সিআইডি তদন্ত করে গোটা ঘটনার। খুনের তত্ত্ব প্রমাণ না হলেও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল পর্নোগ্রাফিক চক্রের।
এপ্রসঙ্গে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী দাবি করেছেন, এফআইআর থেকে শুরু করে চার্জশিট বা বিচার প্রক্রিয়ায় কখনও কোথাও সেই ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকা নাম ওঠেনি। কিন্তু, দেবাংশু এইসব ভুল তথ্য দিয়ে তাঁর সম্মান নষ্ট করেছেন। সেই কারণে তিনি তৃণমূল নেতার কাছে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন । উত্তর না পেলে মামলা করবেন।