বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > ‘ধর্মীয় কারণ’, ১০ মাদ্রাসা শিক্ষককে রাখল না সল্টলেকের অতিথিশালা

‘ধর্মীয় কারণ’, ১০ মাদ্রাসা শিক্ষককে রাখল না সল্টলেকের অতিথিশালা

‘ধর্মীয় কারণ’, ১০ মাদ্রাসা শিক্ষককে রাখল না সল্টলেকের অতিথিশালা (ছবি সৌজন্য সংগৃহীত)

সেই ঘটনায় স্তম্ভিত বুদ্ধিজীবী মহল। বিশ্বাস করতে পারছেন না শিক্ষকরাও

ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য সল্টলেকের একটি অতিথিশালা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুললেন ১০ জন মাদ্রাসা শিক্ষক। যাঁরা আদতে মালদহের বাসিন্দা।

ওই শিক্ষকরা জানিয়েছেন, কাজের সূত্রে তাঁরা বিকাশ ভবনে আসার কথা ছিল। সেজন্য আগেভাগেই সল্টলেকের ডি এল ব্লকের ওই অতিথিশালা ঘর বুক করে রেখেছিলেন। সেইমতো সোমবার সকালে তাঁরা অতিথিশালায় পৌঁছান। কিন্তু অতিথিশালার তরফে জানানো হয়, কোনও ঘর ফাঁকা নেই। তাঁদের সি এল ব্লকের একটি অতিথিশালায় পাঠানো হয়। তিন ঘণ্টা পর সেই অতিথিশালাও ছেড়ে দিতে বলা হয় বলে অভিযোগ শিক্ষকদের।

সল্টলেকের মতো এলাকায় এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ায় অবাক হয়েছেন শিক্ষকরা।   কৃষ্ণপুর মাদ্রাসা এডুকেশন সেন্টারের প্রধান শিক্ষক সাদেক আলি জানান, দীর্ঘ শিক্ষক জীবনে তিনি কখনও এরকম অপমানের মুখে পড়েননি।একইরকম ভাবে হতচকিত হয়ে পড়েছেন জাহাঙ্গির আলি। তাঁর কথায়, ‘কলকাতায় এরকম অপমানিত হতে হবে, তা আমরা কখনও ভাবতেও পারেননি।’

নাম গোপন রাখার শর্তে অতিথিশালার এক কর্মী জানান, মুর্শিদাবাদে ছয় আল কায়দা জঙ্গির গ্রেফতারির পর শিক্ষকদের দেখে আপত্তি জানান স্থানীয়রা। সেজন্য তাঁদের অপর একটি অতিথিশালায় যেতে বলা হয়। দ্বিতীয় অতিথিশালার ম্যানেজার গৌতম বসু বলেন, ‘অপর একটি অতিথিশালার তরফে তাঁদের পাঠানো হয়েছিল। আমরা জানিয়েছিলাম, সকাল ন'টার মধ্যে তাঁদের ঘর খালি করে দিতে হবে। কারণ আমাদের অন্য অতিথি আসার কথা ছিল। তাঁরা সকাল ন'টায় অতিথিশালা ছেড়ে দেন।’

বিষয়টি নিয়ে বিধাননগর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে ডি এল ব্লকের অতিথিশালার পাঁচ কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। 

তবে সেই ঘটনায় স্তম্ভিত বুদ্ধিজীবী মহল। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন কবি জয় গোস্বামী এবং অভিনেতা কৌশিক সেন। তাঁদের বক্তব্য, আল কায়দা জঙ্গিদের গ্রেফতারি কখনও কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে দূরে ঠেলে দেওয়ার অজুহাত হতে পারে। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম আবার সল্টলেকের ওই অতিথিশালার লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের জন্য সর্বদা পরিচিত বাংলা। এটা বরদাস্ত করা হবে না। ওই অতিথিশালার ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া উচিত সরকারের।’

 

বন্ধ করুন