দুর্গাপুজো আসতে বেশি দেরি নেই। এখন থেকেই পুজো কমিটিগুলির প্রস্তুতি তুঙ্গে উঠেছে। আর জোরকদমে কাজ চলছে কুমোরটুলির পটুয়াপাড়ায়। এখান থেকেই দেশ, বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুর্গা প্রতিমার মূর্তি যায়। আর বাংলার একাধিক পুজো কমিটির কাছেও এখান থেকেই মূর্তি যায়। তবে দুর্গাপুজোর শুরুর একসপ্তাহ আগে মহালয়ায় এখানে ভিড় দেখা যায়। চিত্রগ্রাহকরা এখানে এসে নানা ছবি তুলতে থাকেন। তাতে পরিস্থিতি জটিল আকার নেয়। আর তাই এবার মহালয়ার দিন শখের চিত্রগ্রাহকদের কুমোরটুলিতে ছবি তোলা নিষিদ্ধ করা হল। কুমোরটুলি মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই তথ্য জানিয়ে দিয়েছে।
এই ভিড়ের জেরে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। তার উপর কুমোরটুলিতে তৈরি হওয়া প্রতিমা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। ২০২৩ সালের মহালয়ার দিন ছবি ভিডিয়ো তোলার জন্য প্রচণ্ড ভিড় হয়েছিল কুমোরটুলিতে। ভিড়ের জেরে পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে দাঁড়ায়। তখন বাধ্য হয়ে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। এই বিষয়ে মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির বক্তব্য, ২০২৩ সালের মতো অবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার মহালয়ার দিন শখের চিত্রগ্রাহকদের ছবি তোলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পটুয়াপাড়ায় সমিতির অফিস–সহ সর্বত্র সেই নোটিশ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং দুর্গাপুজো শুরুর আগেই মন খারাপ হয়ে গেল শখের চিত্রগ্রাহকদের।
আরও পড়ুন: দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কাজ এগোলো না, রাজভবনে আটকে মন্ত্রিসভার রদবদলের ফাইল
আগের পরিস্থিতিও এবার পাল্টে যাচ্ছে। তাই শখের চিত্রগ্রাহকদের উপর লাগাম টানা হচ্ছে। কুমোরটুলিতে আগে ছবি তোলার জন্য ৫০ এবং ১০০ টাকার টিকিট দেওয়া হতো। ৫০ টাকার টিকিট কাটলে মেয়াদ একদিন। আর ১০০ টাকার টিকিট কাটলে তার মেয়াদ তিন মাস। কিন্তু ২০২৪ সালে মহালয়ার দিন কোনও টিকিটই গ্রাহ্য হবে না। এই বিষয়ে সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘২০২৩ সালের মহালয়ায় পরিস্থিতি এমন হয়েছিল মাইকিং করেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তখন পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি সামলাতে হয়েছিল। এই বছর আর একই পথে হাঁটতে নারাজ সমিতি। তাই আগাম সর্তকতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তবে সংবাদমাধ্যমকে সম্পূর্ণ ছাড় দেওয়া হয়েছে।’
এছাড়া এখন স্মার্টফোনের যুগ। প্রত্যেকের হাতেই তা আছে। তাই নিয়ে অনেকে চলে আসেন কুমোরটুলিতে। আবার ছোট ডিজিটাল ক্যামেরাও অনেকের কাছে রয়েছে। তা নিয়েও ভিড় জমান ছবি তুলতে। এমনকী সেলফি তুলতেও দেখা যায়। তারপর সেইসব ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। মৃৎশিল্পীদের বক্তব্য, ‘সংস্কার মেনে মহালয়ায় একাধিক শিল্পীর ঘরে দুর্গার চক্ষুদান হয়। এই বিশেষ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতে ভিড় জমান বহু শখের চিত্রগ্রাহকরা। মহালয়ার দিন কিছু পুজো কমিটি প্রতিমা নিয়ে যায়। তাই ব্যস্ততা চরমে থাকে। তখন শখের চিত্রগ্রাহকরা নানা শিল্পীর ঘরে ঢুকে ছবি তোলেন। সুতরাং ভিড় জমে যায়।’