দুর্গাপুজো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে মোটের উপর স্বাগত জানালেন বিরোধীরা। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, সেই রায়ের ফলে রাজ্য সরকারের দীর্ঘদিনের চেষ্টা ধাক্কা খেল।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজো সংক্রান্ত মামলার রায়ে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাইকোর্ট। নির্দিষ্ট সংখ্যক পুজো উদ্যোক্তা ছাড়া মণ্ডপে আর কেউ ঢুকতে পারবে না বলে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ছোটো-বড় সমস্ত মণ্ডপের সামনেই পাঁচ থেকে ১০ মিটার দূরত্বে ব্যারিকেড করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
সেই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি জানান, আদালতের রায়ে স্বস্তি মিলেছে। রাজ্যের মানুষকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেছে আদালত। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে কটাক্ষ করে সিপিআই(এম) নেতা দাবি করেন, ভার্চুয়াল মাধ্যমে খোদ দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ রাজ্যবাসীকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পিছপা হচ্ছিলেন না।
হাইকোর্টের রায়ে সন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে দু'কূল বজায় রাখতে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, তৃণমূল সরকারের কোনও মন্ত্রী এবং বর্ষীয়ান নেতার পুজো সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে চলছে না। ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রে বাংলা এখন প্রথমসারির মধ্যে আছে।’ তাঁর দলের নেতা সব্যসাচী দত্ত অবশ্য জানিয়েছেন, হাইকোর্টের রায় মেনেই বিজেপির পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
যদিও পুজো নিয়ে একেবারেই রাজনীতি কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। আদালতের রায়কে স্বাগত জানালেও রাজ্য তা কতটা কার্যকর করতে পারে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘দুর্গাপুজো একটা উৎসব। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে যে মহামারীর কারণে এবার পরিস্থিতি আলাদা। গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি জানি না, রাজ্য সরকার কীভাবে রায় কার্যকর করবে।’
তবে হাইকোর্টের রায়ে হতাশ হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘এটা একেবারে হৃদয়-বিদারক রায় এবং পুজো কমিটির ও নাগরিকদের জন্য বড়সড় ধাক্কা। যেহেতু রাজ্য সরকারকে উদ্দেশ করে রায় দেওয়া হয়েছে, তাই পুরো রায়ের কপি পড়ে এক-দু'দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে প্রশাসন। কিন্তু আমরা এমন কিছু করতে পারব না, যা লাখ লাখ মানুষের উন্মাদনা কমিয়ে দেবে। একইসঙ্গে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে মানুষ যেন সুরক্ষিত থাকেন এবং ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে।’