রাত পোহালেই মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষ দেবীপক্ষের সূচনা হবে। অর্থাৎ দুর্গাপুজোর সেই আমেজ এবং উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যাবে। কারণ মহালয়ার একসপ্তাহ পরই দুর্গাপুজো। তাই এখন থেকেই শপিংয়ের চেনা ভিড় দেখা যাচ্ছে। উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে মানুষ। এই পরিস্থিতি দেখে রেল বুঝতে পেরেছে ভিড় বাড়বে। আর তার জন্যই নৈহাটি ও কল্যাণী শাখার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করল পূর্ব রেল। সপ্তমী থেকে শুরু করে দশমী পর্যন্ত জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে বলে গতকাল ঘোষণা করেছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। তাতে যাত্রীরা হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন। কারণ যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঝক্কি সামলাতে হবে না।
দুর্গাপুজোর সময় জেলার মানুষ যেমন কলকাতায় আসেন তেমন কল্যাণীর বড় পুজো দেখতে শহরের মানুষও জেলায় যায়। বিপুল ভিড় দেখা যায় কল্যাণী ও নৈহাটি শাখায়। আর সেটা সামলাতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতেই হয়। দুর্গাপুজোর সময় কল্যাণী–নৈহাটি শাখায় প্রচুর ভিড় হয়। এবারও যে তার অন্যথা হবে না সেটা আগে থেকেই টের পেয়েছে পূর্ব রেল। তাই এবার জোড়া ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে পূর্ব রেলওয়ের শিয়ালদা ডিভিশন। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে নৈহাটি থেকে কল্যাণী সীমান্ত পর্যন্ত সব লোকাল ট্রেন কল্যাণী স্টেশন পর্যন্ত যাবে। কল্যাণী সীমান্ত পর্যন্ত যাবে না। আরও ছয় জোড়া লোকাল ট্রেন যা শিয়ালদা–কল্যাণী সীমান্ত পর্যন্ত যাতায়াত করে, সেগুলি ১২ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত শুধু কল্যাণী স্টেশন পর্যন্ত যাবে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর পর আরজি কর মামলার পরবর্তী শুনানি, সিবিআইকে স্ট্যাটাস রিপোর্ট দিতে নির্দেশ
কলকাতায় বিগ বাজেটের পুজো হয়। তাই জেলা থেকে কলকাতায় আসা দর্শণার্থীদের প্রবণতা বেশি। আবার কলকাতার মানুষজন দু’একদিন সেই ভিড় পরখ করে জেলার নিরিবিলি অথচ বড় দুর্গাপুজো দেখতে যান। ইদানিং এই ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। তাই ২০২৩ সালের দুর্গাপুজোয় অন্যরকম ছবি দেখা গিয়েছে কল্যাণী শাখায়। শিয়ালদাগামী ট্রেনে যে ভিড় হয়েছিল সেটা তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। এককথায় ট্রেনে থিকথিকে ভিড়। সপ্তমী থেকে নবমী মাঝরাত পর্যন্ত লোকাল ট্রেনগুলিতে ভিড় দেখা গিয়েছিল। কল্যাণীর আইটিআই মোড়ের কাছে যে দুর্গাপুজো হয় তারা চিনের বিলাসবহুল হোটেল ‘গ্র্যান্ড লিসবোয়া’র আদলে তৈরি করেছিল মণ্ডপ। সেই মণ্ডপ দেখতে উপচে পড়েছিল মানুষের ভিড়।
শুধু কালো মাথা আর মাথা। আলোর রোশনাই যেন সেই মানুষের ভিড় শুষে নিচ্ছে। এমনই সেবার ঘটেছিল। তাই বাস্তব পরিস্থিতি এড়াতে পারেনি পূর্ব রেল। এবারও সেটা বুঝতে পেরেছে পূর্ব রেল। আগাম বুঝতে পারার জন্যই এই শাখায় জোড়া ট্রেনের ব্যবস্থা করছে। কল্যাণী যেতে গেলে শিয়ালদা থেকে রানাঘাট, শান্তিপুর, গেদে অথবা কৃষ্ণনগরের মতো যে কোনও লোকাল ট্রেনে উঠে পড়লেই কল্যাণী স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যায়। আর কল্যাণী সীমান্ত লোকাল আরও তিনটি স্টেশন পেরিয়ে কল্যাণী সীমান্ত পর্যন্ত যায়। কল্যাণীর পরই আছে কল্যাণী ঘোষপাড়া, কল্যাণী শিল্পাঞ্চল এবং কল্যাণী সীমান্ত স্টেশন।