আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। সকাল থেকেই ঘাটে ঘাটে তর্পণ চলছে। হাতে আর বেশি সময় নেই। আর একসপ্তাহ পর গোটা রাজ্য মেতে উঠবে শারদ উৎসবে। এখন থেকেই পুজো শপিংয়ের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সুতরাং দুর্গাপুজোর সময় ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। শহরতলি ও মফস্সল থেকে মানুষ দুর্গাপুজো দেখতে ভিড় জমাবেন। আর সেইসব দর্শণার্থীদের সুবিধায় দুর্গাপুজোর সময় অতিরিক্ত ভেসেল চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হুগলি জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। শুধু তাই নয়, দুর্গাপুজোর চারদিন মাঝরাত পর্যন্ত পরিষেবা চালু রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই ভিড় সামলাতে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা। যাতে কারও সমস্যা না হয়।
দুর্গাপুজো ছাড়া অফিসটাইমে হাওড়া ফেরিঘাট থেকে গোলাবাড়ি, আহিরীটোলা, শোভাবাজার হয়ে বাগবাজার ঘাট পর্যন্ত আধঘণ্টা অন্তর দু’টি করে ভেসেল চালানো হয়। হাওড়া ফেরিঘাট থেকে বাবুঘাট পর্যন্ত ১৫ মিনিট অন্তর চলে আরও দু’টি ভেসেল। এমনকী হাওড়া ফেরিঘাট থেকে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত ১০ মিনিট অন্তর চলে ভেসেল। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সময়ে এই পাঁচটি ভেসেলের মাধ্যমে হাওড়া থেকে কলকাতার নানা প্রান্তে হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। তবে দুর্গাপুজোর সময় ভিড়ের চাপ বাড়ে। এবার সেই ভিড় সামলাতে মাঝরাত পর্যন্ত ফেরি পরিষেবা চালু থাকবে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পিওন বিপুল সম্পত্তির মালিক, তদন্তে নেমে চোখ কপালে উঠল সিআইডির
প্রত্যেক বছর নানা জেলা থেকে কয়েক লক্ষ মানুষ প্রতিমা দর্শন করতে চলে আসেন কলকাতায়। ভিড় বাড়তে থাকে। তাই পূর্ব রেল ও দক্ষিণ–পূর্ব রেল বাড়তি ট্রেন চালায়। এমনকী সারারাত লোকাল ট্রেন চালানো হয়। তাতে বহু মানুষের উপকার হয়। তবে লোকাল ট্রেন, মেট্রোর পাশাপাশি ভেসেল সার্ভিস চালু থাকলে দুর্গাপুজোর সময় কোনও সমস্যা হবে না যাতায়াতের সময়। হাওড়া স্টেশনে নেমে যাত্রীরা ভেসেলে করে শহরে প্রবেশ করতে পারবেন। এখন আবার হাওড়া পর্যন্ত মেট্রো চালু হয়েছে। সুতরাং সবরকম পরিষেবা চালু থাকলে মানুষের ভিড় সামলানো সহজ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তাই গঙ্গা পার করতে অতিরিক্ত ভেসেল চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে হুগলি জলপথ পরিবহণ সমবায়। এই সমিতির চেয়ারম্যান রামচরণ মান্না বলেন, ‘দুর্গাপুজোর সময় হাওড়া–বাগবাজার রুটে ৩০ মিনিট অন্তর ভেসেল চালানো হবে। মাঝরাত হলেও ভিড় না কমা পর্যন্ত ফেরি পরিষেবা পাবেন যাত্রীরা।’
এছাড়া হাওড়া থেকে বাগবাজার যাওয়ার জন্য হাওড়া আর্মেনিয়ান রুটের ভেসেলটিকে এই রুটে চালানো হবে। প্রত্যেকটি ভেসেলে বাড়তি লাইফ জ্যাকেট থাকবে। সেখানে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরাও থাকবেন। আর এই ভিড়ের ফলে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য লঞ্চে যাত্রী তোলা ও নামানোর জন্য দু’টি জেটি পৃথকভাবে ব্যবহার করা হবে। হুগলির নিত্য কয়েকজন বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘দুর্গাপুজোর সময় হাওড়া স্টেশন থেকে উত্তর কলকাতা যাওয়ার ক্যাবও সময়ে মেলে না। অনেক বাড়াও লাগে। অতিরিক্ত ভেসেল চালালে খুব সহজেই বাগবাজার, আহিরীটোলার ঠাকুর দেখতে পৌঁছনো যাবে।’