উত্তর কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজো নিয়ে আগেই খোঁজখবর করা শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। তার জন্য চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। এবার কলকাতার সমস্ত বড় বারোয়ারি দুর্গাপুজোর ‘খোঁজ’ নেওয়া শুরু করল কলকাতা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পুজো কমিটির বৈঠকে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, পুজো কমিটিগুলির থেকে থিম জেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে। এবার সেই নির্দেশ মেনেই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলির কর্তাদের সঙ্গে কথা বলা শুরু হয়েছে। কী থিম থেকে শুরু করে মণ্ডপের আয়তন এবং আলো ও শব্দের ব্যবহার নিয়ে খুঁটিনাটি বিষয় দেখা হচ্ছে।
২০২৩ সালে ‘রামমন্দির’ বানিয়ে ভিড় বাড়িয়ে ছিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজো। তাদেরকে চিঠি লেখা হয়েছে। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা তথা বিজেপির পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বলার আগে গত ১৮ তারিখেই মুচিপাড়া থানা চিঠি দিয়ে কিছু নির্দেশ দিয়েছে। থিমও জানাতে বলা হয়েছে। এই ধরনের চিঠি অন্য কোনও পুজো কমিটি পেয়েছে বলে আমি জানি না। আসলে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ পাল্টা সেন্ট্রাল ডিভিশনের ডিসি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্দিষ্ট দিনে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের খুঁটিপুজো ছিল। তার আগে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর নয়াদিল্লি সফর বাতিল, নীতি আয়োগের বৈঠক পড়ল এখন বড় প্রশ্নের মুখে
দুর্গাপুজো করতে গিয়ে যদি রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয় তাহলে মানুষজনকে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। তাই পুজো কমিটিগুলিকে বলা হয়েছে, মণ্ডপে ঢোকার থেকে বেরোনোর পথ চওড়া রাখতে হবে। হকার বসানো চলবে না। সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়াতে হবে। পুলিশের জন্য মঞ্চ তৈরি করতে হবে। যাতে সেখান থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দুর্গাপুজোর দিনে ব্যস্ত সময়ে অন্তত ২৫০ জন এবং অন্য সময়ে অন্তত ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। লেজার আলো এবং বিশেষ শব্দ ব্যবহার করতে হলে পুলিশের আগাম অনুমতি নিতে হবে। মণ্ডপের আলো নেভানো চলবে না। এটা করতে হলে পুলিশের অনুমতি বাধ্যতামূলক।
এই বছর দুর্গাপুজোয় রাজ্য সরকারের অনুদান গতবছরের তুলনায় অনেকটা বেশি। আর সেটা পেতে পুজো কমিটিগুলি এখন ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে ব্যস্ত। তবে তার মধ্যেও নির্দেশিকা প্রত্যেকের কাছেই যাচ্ছে। এই নির্দেশিকার বিষয়ে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’–এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসুর বক্তব্য, ‘সমস্ত পুজো কমিটিই পুলিশের নির্দেশ মেনে চলবে। আর যারা চলবে না সেক্ষেত্রে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তারাই দায়ী থাকবে। আর সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো নিয়ে পক্ষপাতের কোনও বিষয় নেই। যাঁরা ২০২৩ সালে গোলমাল করেছিলেন তাঁদের ক্ষেত্রেই কড়া হচ্ছে পুলিশ।’