যাঁরা বাংলার অপমান করছেন, তাঁদের শুভ যেন শুভ বুদ্ধির উদয় হয়! শুক্রবার দুর্গাপুজোর উদ্বোধন সংক্রান্ত কর্মসূচির ফাঁকে ফের একবার 'বাংলা-বিরোধী'দের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, এদিন দক্ষিণ কলকাতার হিন্দুস্তান পার্কে দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করার সময়েই মুখ্যমন্ত্রী বাংলার 'যাঁরা অপমান করেন', তাঁদের আবারও একবার বার্তা দেন।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের জেরে এবারের পুজো অন্যান্য সমস্ত বছরের থেকে অনেকটাই আলাদা। পুজো নিয়ে আমবাঙালির আবেগে ভাটা না পড়লেও পুজোর জৌলুস, জাঁকজমকের চেনা ছবিটা এবার যেন অনেকটাই ফিকে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং রাজ্যবাসীকে 'উৎসবে ফেরা'র আবেদন জানিয়েছিলেন অনেক আগেই। সেই সময় তাঁর সেই মন্তব্য নিয়ে কম আলোচনা, সমালোচনা হয়নি। তারপর অবশ্য কিছুটা ঢিমে তালে হলেও পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গেই চলছে আরজি কাণ্ডের প্রতিবাদ।
এদিকে, অন্যান্য বছরের মতো এবারও একের পর এক বারোয়ারি পুজোর উদ্বোধন শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতার একাধিক নামি পুজোর উদ্বোধন করেন তিনি। সেই তালিকায় শহরের অন্যতম জনপ্রিয় পুজো কমিটি হিন্দুস্তান পার্কও ছিল।
পুজো উদ্বোধনের সময়েই কথার ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী আরজি কর প্রসঙ্গ তোলেন। তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে দুর্ঘটনা এবং দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সেই সমস্ত দুঃখজনক ঘটনা কেউ মানতে পারে না।
এই প্রেক্ষিতেই আবারও একবার 'তাঁদের' নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী, যাঁরা নানা সময়ে নানা কারণে বাংলার অপমান করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। দেবীপক্ষে সেইসব মানুষের যাতে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়, সেই প্রার্থনাও করেন।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে তিনি যে কতটা ব্যথিত, তা বোঝাতে ইতিমধ্যেই কলম ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় মুখপত্রের উৎসব সংখ্যায় এ নিয়ে একটি নিবন্ধও লিখেছেন তিনি।
সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ব্যাখ্যা দিয়েছেন, আরজি করের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার অপরাজিতা বিল এনেছে। রাজ্য বিধানসভায় সেই বিল পাসও করা হয়।
কেন, কী কারণে তাঁর সরকার সেই বিল আনতে বাধ্য হয়েছিল, নিজের লেখায় তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার পুজোর উদ্বোধন করতে বেরিয়েও আরও একবার আরজি কর প্রসঙ্গ তুলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবারও একবার বার্তা দিলেন, এই 'দুঃখজনক' এই 'দুর্ঘটনা' তাঁকে কতটা আঘাত করেছে। এই বিষয়ে আমজনতার আবেগের প্রতিও সহমর্মিতা প্রকাশ করলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।