বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > Duttapukur Blast Exclusive: নারায়ণপুরে বাজির রমরমা, বারুদের ঝুঁকিতে কি বিশ্ববিদ্যালয়ও? কী বলছে কর্তৃপক্ষ

Duttapukur Blast Exclusive: নারায়ণপুরে বাজির রমরমা, বারুদের ঝুঁকিতে কি বিশ্ববিদ্যালয়ও? কী বলছে কর্তৃপক্ষ

এভাবেই চলে বাজি কারখানা (নিজস্ব চিত্র)

Duttapukur blast exclusive: বারুদের কারবার চলে নারায়ণপুর আর বেরুনান পুকুরিয়ার বাড়িতে বাড়িতে। ঠিক পাশেই ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি আর কিংস্টোন এডুকেশনাল ইনিস্টিটিউট। একশো মিটারের মধ্যেই বাজির রমরমা।

‘নারায়ণপুরে ঘরে ঘরে বাজির কাজ। ব্যাটাছেলে মেয়েছেলে সক্কলে করে।’ কথা হচ্ছিল কেরামত আলিকে নিয়ে। হঠাৎই এ কথা বললেন কাঠুরিয়ার হাসিনা বিবি*। শুধু হাসিনা বিবি নন, কাঠুরিয়া, মোচপোলের স্থানীয়দের মুখে এই জায়গার নামই সবচেয়ে বেশি ঘুরছে। সেখানের হাওয়ায় কান পাতলেই বাজির সঙ্গে শোনা যায় নারায়ণপুরের নাম। পুজোর মরসুম এলেই বাজির মার্কেটের রমরমা সেখানে ।

কিন্তু লাইসেন্স? সরকারি ছাড়পত্র? আগে জানা যাক কোথায় এই নারায়ণপুর। মোচপোল থেকে এক-দেড় কিলোমিটার দূরে একটি চার মাথার মোড়। মোড়ের আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কিংস্টোন এডুকেশনাল ইনিস্টিটিউট। মোড় থেকে নীলগঞ্জের দিকে চলে গিয়েছে পিচ রাস্তা। সে রাস্তার মুখ থেকেই শুরু নারায়ণপুর এলাকা। ইউনিভার্সিটির একশো মিটারের মধ্যেই এই অঞ্চল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম দিকে নারায়ণপুর, ডানদিকে বেরুনান পুকুরিয়া গ্রাম।

<p>বাঁদিকের লাল গোলের ভিতর ইঁটভাটার চিমনি। এখানেই ছিল গবেষণাগার। হলুদ চিহ্নের নিচে কিংস্টোন এডুকেশনাল ইন্সটিটিউট। ছবিটি ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাদ থেকে তোলা</p>

বাঁদিকের লাল গোলের ভিতর ইঁটভাটার চিমনি। এখানেই ছিল গবেষণাগার। হলুদ চিহ্নের নিচে কিংস্টোন এডুকেশনাল ইন্সটিটিউট। ছবিটি ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাদ থেকে তোলা

(নিজস্ব চিত্র)

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই দুই গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে বাজির কারবার। বেরুনান পুকুরিয়ায় কম হলেও নারায়ণপুরে যেন কুটির শিল্প! গ্রামে ঢুকতেই বোঝা গেল থমথমে পরিবেশ। মুখ খুলতে রাজি নয় কেউ। অনেক সাধ্য সাধনার পর এক বয়স্কা স্বীকার করলেন সে কথা। ৪০০, ১০০০টা করে খোল বাঁধতে দিত‌ আলুবাজির। কিছুদিন আগেও সে কাজ করেছেন। এখন আর পারেন না। কারণ 'কোমরে ব্যথা।' আরেকজনের কথায় ‘পয়সার জন্য করতাম বাবা। এখন করি না।’ বেরুনান পুকুরিয়ায় এক বাসিন্দা জানালেন, 'ভয়ে ভয়ে থাকি এলাকায়। দুজনের সংসার। মাঝে মাঝেই আশেপাশের বাড়িতে মাল দিয়ে যায় কিছু লোক। কখন‌ কী ঘটে যাবে, জানে না কেউ। মুখে কুলুপ এঁটে থাকি। বড় নেতারা আছেন এর পিছনে।'

(আরও পড়ুন: ফেরার এবাদুলের বাড়ির পাশেই কাঠুরিয়া স্কুল!শিশুদের গায়েও কি পড়ছে বারুদের ঘ্রাণ)

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে ঘন ঘন মেস এই অঞ্চলে। মেস মালিকদের মুখের উত্তর ‘কিছু বলতে পারব না!’ নারায়ণপুরে ঢুকতেই উত্তরের সঙ্গে সন্দেহ। ‘কোথা থেকে আসছেন?’, ‘এসব খোঁজে কী দরকার?’ আর ‘আমরা কিছু জানি নে’। কাঠুরিয়ার এক চায়ের দোকানে কানে এসেছিল ‘কিছুদিন সাইড হয়ে যাওয়ার’ গল্প। 'সব মাল এখন ‘সাইড’ করে দিয়েছে নারায়ণপুরে। সামনে বিশ্বকর্মা পুজো। চাপ আছে। তবু সবাই সাবধান। ভয় মিডিয়াকেই! বাকি সব তো ‘ম্যানেজ’ হয়ে যায়।' সব কথার মধ্যে ‘ম্যানেজ’টাই যেন আসল!

লাইসেন্স প্রসঙ্গে সবুজ মঞ্চ সংগঠনের নব দত্ত বললেন কিছু কারখানার কথা। সারা রাজ্যে এখন সবুজ বাজির লাইসেন্স পেয়েছে মাত্র সাতটা কারখানা। সেগুলোর মধ্যে ছয়টি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আর একটি দার্জিলিংয়ে‌। এর বাইরে সব বেআইনি। সে নারায়ণপুর হোক বা নীলগঞ্জ! ৫ অগস্ট মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক হয়। তাতে হাজার খানেক বেআইনি বাজি কারখানা চিহ্নিত করা হয়েছিল। এগুলোর সবকটিতেই কমবেশি কাজ চলে।

(আরও পড়ুন: বাজি ছাড়াও ‘অন্য কাজে’ হাত লাগান মোচপোল-কাঠুরিয়ার মহিলারা! ঝুঁকি বেশি নাকি লাভ)

<p>রাস্তার ওপাশে নারায়ণপুর এলাকা। ছবি ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তোলা।</p>

রাস্তার ওপাশে নারায়ণপুর এলাকা। ছবি ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তোলা।

(নিজস্ব চিত্র)

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কিংস্টোন, এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই বিশাল এলাকা জুড়ে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের ভিতর ঝিল রয়েছে। রয়েছে বিশাল ফাঁকা এলাকা। ঠিক উল্টোদিকেই নারায়ণপুর, বেরুনান পুকুরিয়া। দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ২৪ ঘন্টা সিকিউরিটি। কিন্তু সেটা গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে? না শুধু গেটে? এই ব্যাপারে মুখে কুলুপ দুই প্রতিষ্ঠানেরই। হাজার হাজার পড়ুয়া রোজ যাতায়াত করছে এই এলাকা দিয়ে। চার মাথার মোড়ের অটো, ভ্যান আর টোটোর ব্যবসা টিকে আছে এই পড়ুয়াদের ভরসায়। অথচ তাঁদের নিরাপত্তা?

ডিস্ট্রিক্ট ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর শালিনী ঘোষ মোচপোল শব্দটি শুনেই‌ কোনও কথা বলতে চান না। দত্তপুকুর থানার অন ডিউটি পুলিশকর্মী জানান, এ ব্যাপারে বড়বাবুর সঙ্গে কথা বলুন। বারাসতের এসডিপিও অনিমেষ রায়ের ফোন বেজে যায়। নীলগঞ্জ ফাঁড়ির এসআইও একবার ফোন ধরার পর থেকে ‘বিজি বিজি বিজি….’। সিকিউরিটি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে ‘বিজি’ হয়ে যান কিংস্টোন এডুকেশনাল ইনিস্টিটিউটের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তপনকুমার দত্ত জানান, ‘কিছু বলবেন না এভাবে।’ কম বেশি নারায়ণপুরের খবর এলাকায় সবাই জানে। পুলিশই শুধু জানে না? নিরাপত্তার প্রশ্নে সবদিকেই নীরবতা? তাহলে কি আরেকটা ভয়াবহ ‘আওয়াজ’-এর অপেক্ষা চলছে?

(* চিহ্নিত নামগুলি বিশেষ কারণে পরিবর্তিত)

বাংলার মুখ খবর

Latest News

ক্যানসারের ওষুধে, নিমকিতে কমছে জিএসটি, স্বাস্থ্য বিমা নিয়ে সিদ্ধান্ত কবে? মুম্বই থেকে সোজা লন্ডনে ছুট! রাস্তায় ছেলে কোলে অনুষ্কা, পাশে বিরাট, ব্যাপারটা কী বাবরদের চুনকাম করে ভারতে আসছে বাংলাদেশ, কেন সতর্ক থাকতে হবে, স্পষ্ট জানালেন গিল আগামিকাল ১০ সেপ্টেম্বরের রাশিফল আজই দেখে নিন! মেষ থেকে মীনের মধ্যে লাকি কারা? সোমবারের বহু প্রতীক্ষিত 'সুপ্রিম শুনানি'র পর আরজি কর-এ কোন সুর দিল্লিতে বাজি তৈরি, বিক্রি, ব্যবহার নিষিদ্ধ ১ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত, কেন জানেন? 'টাকার কথা বলিনি' মিথ্যেবাদী মুখ্য়মন্ত্রী, মমতার ভিডিয়োতে প্রমাণ দিলেন শুভেন্দু 'আমার বাড়িতে তো আর পুজোর আলো জ্বলবে না', মমতার ‘উৎসবে ফেরা’-র ডাক শুনে বললেন মা ‘আমাদের আন্দোলনকে অসম্মান করা…কথাগুলো কষ্টের’, মমতার ‘উৎসব’ বার্তায় হতাশ কিঞ্জল বাপ্পার পছন্দের মোদক নয়, বাংলায় গণেশের জন্য বানানো হল ৫০০ কিলোর লাড্ডু!

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.