বর্ষা আসলেই শহরে ল্যাম্পপোস্ট থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রায়ই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। অতীতে এরকম অনেক তড়িদাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে বর্ষা ঢুকে গিয়েছে। ফলে বৃষ্টির জল জমে বা বাজ পড়ে যাতে কোনওভাবে লাইটপোস্ট থেকে দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতার ৩ লক্ষ লাইট পোস্টে আর্থিং করার উদ্যোগ নিয়েছে কেএমসি। এরজন্য ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ই-বর্জ্য সংগ্রহে আবাসনে শিবির, সচেতন করতে প্রচার চালাবেন কাউন্সিলররাও
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক সময় তারের ওপরে কয়েক লক্ষ ভোল্টেজের বাজ পড়লে লাইট পোস্টের মধ্যে দিয়ে কিছুটা বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে থাকে। এই অবস্থায় লাইটপোস্টের আশেপাশে কোনও ব্যক্তি চলাচল করলে তা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ফলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, আর্থিংয়ের মাধ্যমে সেই বিদ্যুৎ মাটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। ফলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। মেয়র পারিষদ সন্দীপরঞ্জন বক্সী (আলো) জানিয়েছেন, দ্রুত কলকাতার ৩ লক্ষ লাইটপোস্টে আর্থিং করা হবে। সে ক্ষেত্রে মাটিতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হবে তারের একটি অংশ। ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে যুক্ত থাকবে তারের অন্য অংশ।
পুরসভা জানা গিয়েছে, আর্থিং করার জন্য ল্যাম্প পোস্ট থেকে এক মিটার দূরে গর্ত করা হচ্ছে। প্রায় ১০ ফুট গভীর গর্ত করে ২ ইঞ্চি মোটা পাইপ বের করে সেখানে প্রবেশ করানো হবে তার। পরে সেই গর্তে কাঠকয়লা, চুন প্রকৃতি দিয়ে ভরাট করা হবে। এর ফলে তারের ওপর বা ল্যাম্পপোস্ট উপরে বাজ পড়লে দ্রুত বিদ্যুৎ মাটিতে চলে যাবে। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রত্যেকটি ল্যাম্পপোস্ট আর্থিং করতে খরচ হচ্ছে ২ হাজার টাকা। সেই অনুযায়ী, তিন লক্ষ ল্যাম্পপোস্ট আর্থিং করতে খরচ হবে মোট ৬০ কোটি টাকা। তবে সব ল্যাম্পপোস্টের আশেপাশে যে সমানভাবে মাটি থাকবে তা নয়। সে ক্ষেত্রে মাটি কম থাকলে অন্য ব্যবস্থা করা হবে। তার জন্য অতিরিক্ত খরচ হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে ৬০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম নির্দেশ দিয়েছিলেন, বর্ষা আসার আগেই শহরের সমস্ত ল্যাম্পপোস্ট পরীক্ষা করার জন্য। সেই নির্দেশ মেনেই ল্যাম্পপোস্টগুলিকে আরও সুরক্ষিত করে তোলা হচ্ছে।