বৃহস্পতিবার ইডি তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করল। এর আগে সিবিআই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছিল। এবার ইডির পালা। শেখ শাহজাহান, তার ভাই ও আরও দুজন অভিযুক্তের নামে এই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে এই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। আর্থিক নয়ছয়, প্রতারণা সংক্রান্ত মামলায় এই চার্জশিট। ইডি জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অন্তত ১৩টি এফআইআর করেছিল। তার ভিত্তিতেই এই তদন্ত শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও মামলা হয়েছিল।
সেই এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছিল শেখ শাহজাহান ও তার সঙ্গীরা একেবারে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। মারধর, খুন, তোলাবাজি সহ নানাভাবে তারা এই পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।
ইডি তার বিবৃতিতে জানিয়েছে, শেখ শাহজাহান গোটা এলাকায় একেবারে দুষ্কৃতীরাজ কায়েম করেছিল। জমি ছিনিয়ে নেওয়া, অবৈধভাবে মাছের ভেড়ি তৈরি করা, অবৈধভাবে কর বা লেভি আদায় করা ও জমি বেচাকেনার জন্য কমিশন আদায় করা, ইট ভাটা কেড়ে নেওয়া সহ একাধিক ক্ষেত্রে শাহজাহান তার সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল। কার্যত বলা হল লোনা জলে সোনা ফলে…উল্লেখ ইডির চার্জশিটে।
এদিকে তদন্তে নেমে ইডি অনেকের সঙ্গে কথা বলে।কৃষক, আদিবাসী, মাছের ব্যবসায়ী, এজেন্ট, আমদানিকারক, জমির মালিক, ঠিকাদার, সহ অনেকজনের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
ইতিমধ্য়ে ইডির তরফে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্য়ে শাহজাহান ও তার ভাই আলমগীরের গাড়ি রয়েছে।
এদিকে এর আগে ইডি একাধিক স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। সব মিলিয়ে ২৭.০৮ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
তদন্তে দেখা গিয়েছে, প্রায় ২৬১.৪১ কোটির অপরাধ ( প্রসিডস অফ ক্রাইম) সংগঠিত করেছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।
নকল ঠিকাদার দিয়ে সরকারি টাকা লুঠ করার অভিযোগও শাহজাহানের বিরুদ্ধে।
এদিকে বুধবার সন্দেশখালিতে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা কার্যত হাড়হিম করা ব্যাপার। একাধিক বাসিন্দা দাবি করেন যে তাদের চাষের জমি জোর করে কেড়ে নিত শাহজাহান বাহিনী। সেখানে লোনা জল ঢুকিয়ে দিত। আর সেই জলেই চাষ হত। কিন্তু সেই চাষের জমি কেড়ে নেওয়ার বিনিময়ে একবার টাকা দিলেও আর তারা টাকা দিতে চায়নি। টাকা চাইলেই চলত অত্যাচার।
তবে এখনও আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। তাদের দাবি, শাহজাহানরা ফিরে এলেই ভয়াবহ অত্যাচার শুরু করবে। সিপিএম আমলেও এমন অত্যাচার হত না।