কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন একটা অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। অস্থায়ী উপাচার্যকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে ঘেরাও করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। আর তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই নিয়ে এখন জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তালাবন্দি করে মাঝরাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এই বিক্ষোভকারী ছাত্রদের আনা অভিযোগের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করলেন শিক্ষামন্ত্রী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠক এবং অস্থায়ী উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ চরমে ওঠে।
এদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে বেআইনি উপায়ে পদে থাকা এবং আইন বহির্ভূতভাবে সিন্ডিকেট বৈঠক করার অভিযোগ আনা হয়। যার পাল্টা জবাব দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দাবি করেন, যাঁরা এখানে এসে জড়ো হয়েছেন এবং তাঁদের যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁরা কেউ ছাত্র নন। এই অভিযোগ তোলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। ঘেরাও–আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। এই অচলাবস্থার পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘ছাত্ররা কী করেছেন আমি বলতে পারব না। সংবাদমাধ্যমে যা দেখেছি, যে প্রশ্ন তাঁরা তুলছিলেন তা ভুল নয়। যাঁরা উপাচার্যের নাম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: মহালয়ার দিন কুমোরটুলিতে ছবি তোলা যাবে না, কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির
অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠককে ‘অবৈধ’ দাবি করে প্রতিবাদ করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পড়ুয়ারা। অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে এবং অন্যান্য সিন্ডিকেটের সদস্যদের ঘেরাও করেন তাঁরা। তখন একদিকে বিক্ষোভ অপরদিকে সিন্ডিকেট বৈঠক করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য। বৈঠক শেষে তাঁরা বের হতে পারেননি। কারণ গেটে তালা লাগানো ছিল। রাতে জোড়াসাঁকো থানায় খবর দেন উপাচার্য। তখন পুলিশ এসে তালা খুলে বের করে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার–সহ বাকি সদস্যদের। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর বক্তব্য, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের ক্যাম্পাসে ঢোকাই উচিত নয়। উনি এখনও নীলবাতি গাড়ি ব্যবহার করছেন।’
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য জানান, তিনি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলছেন। এই মন্তব্যের পরই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কথায়, ‘মহামান্য সুপ্রিম কোর্টকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যাঁরা সরকারি স্তরের সাহায্য নিচ্ছেন, আশা করি আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। যে সব অনুপ্রবেশকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ উপাচার্য শান্তা দত্ত দে’র পাল্টা বক্তব্য, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে উপাচার্যের অবসরের বয়স ৭০ বছর। আমাদের রাজ্য সরকার এবং ইউজিসি’র নিয়মে উপাচার্য পদে অবসরের বয়স ৭০ বছর। আমি কিন্তু আচার্যের নির্দেশেই উপাচার্যের পদে আছি।’