শীত এখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। হালকা হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। পাখা না চালিয়ে দিব্যি কাটাচ্ছেন। তবে শীতের শাক–সবজি এবং আলু–পেঁয়াজের দাম সেই উর্দ্ধমুখী। মাছের দামও খুব একটা নাগালে নেই। মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে বাজারে গিয়ে শাক–সবজি–আলু–পেঁয়াজ–মাছ কিনতে। এই আবহে বঙ্গবাসী মনে করেছিলেন ডিম দিয়ে শীতের আহার সারবেন। কিন্তু সেই ডিমেরও দাম বেড়ে গেল। আজ, শনিবার বাজারে গিয়ে গৃহস্থরা তা টের পেলেন। অনেকে সংখ্যায় কমিয়ে বাজেট নিয়ন্ত্রণে রাখলেন। আবার অনেকে দাম এত বাড়ল কেন? প্রশ্ন করে জায়গা ছাড়লেন। তাই ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠল মধ্যবিত্তের।
একসপ্তাহ আগে খুচরো বাজারে একটা ডিমের দাম ছিল সাড়ে পাঁচ টাকা। কেউ কেউ ৬ টাকাও নিচ্ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার দিন থেকে একধাক্কায় সাড়ে ৭ টাকা হয়ে গেল। এমনকী শনিবার সকালে বহু বাজারে ডিম বিক্রি হল ৮ টাকায় বলে অভিযোগ। অথচ বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধিরা। বেশ কযেকজন ক্রেতা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, ‘আলুর দামই যারা কমাতে পারে না, তারা আবার ডিমের দাম কি কমাবো। অল আর ভোগাস।’ বেশিরভাগ বাজারেই ডিমের দাম হয়েছে সাড়ে সাত টাকা। বড়দিনের প্রাক্কালে কেকের জন্য ডিমের চাহিদা আরও বাড়বে। তাই এখন থেকে দাম বাড়িয়ে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বইমেলাতেও বিজেপি বিধায়ক ডাক পেলেন না, রাজ্য সরকারের মন্ত্রীই উদ্বোধনের মধ্যমণি
কেন হঠাৎ ডিমের দাম বেড়ে গেল? ব্যবসায়ীদের কয়েকজন জানান, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশায় কিছুদিন আগে পর্যন্ত ডিমের তেমন চাহিদা ছিল না। একদিকে ডিমের জোগান কম, অপরদিকে মুরগির খাবারের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই দাম বেড়ে গিয়েছে। দুর্গাপুজো এবং দীপাবলির পরেও ডিমের দাম এতটা ছিল না। একসপ্তাহ আগে হঠাৎই চড়তে শুরু করেছে ডিমের দাম। ৬ টাকা থেকে বেড়ে হয় সাড়ে ৬ টাকা। তারপরই হয়ে গেল ৭ টাকা। এখন সাড়ে ৭ টাকা ও ৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ডিম।
যখন সবকিছুর দাম বাড়ছে তখন কেন্দ্রীয় সরকার মিড–ডে মিলে বরাদ্দ বাড়িয়েছে ৭৪ পয়সা। সেক্ষেত্রে শিশুদের মুখে কেমন করে পুষ্টিকর খাবার তুলে দেওয়া যাবে তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। বাংলায় ডিমের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। নিম্ন আয়ের পরিবারের মানুষজন ডিম প্রায়ই পাতে নেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলায় রোজ চার কোটির কিছু বেশি ডিম লাগে। সেখানে দৈনিক সাড়ে তিন কোটি ডিম উৎপাদন হয়। বাকিটা দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি থেকে কিনতে হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি বলেন, ‘মুরগির খাবারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। তাই ডিমের দামও বেড়েছে।’