শীত কমে আসছে। আর তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঘরে ঘরে জ্বর। চিকিৎসকরা বলছেন ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে কলকাতায়। এনিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা। শুধু শিশুদের নয়, বহু বয়স্ক মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভুগছেন। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এই সমস্যায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। অনেকের মধ্যেই শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জ্বরে একেবারে গা পুড়ে যাচ্ছে, বুকে কফ বসে যাচ্ছে। তার সঙ্গে শরীর একেবারে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
তবে চিকিৎসকদের মতে, এর সঙ্গে সোয়াইন ফ্লুর সম্পর্ক নেই। এক্ষেত্রে মৃত্যুর হারও সেভাবে নেই। তবে এর জেরে কয়েকদিন ধরে বেশ ভুগতে হতে পারে।কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজিস্ট ভাস্কর নারায়ণ চৌধুরী একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ থেকে আচমকাই মরসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। কয়েকজনকে আইসিইউতে রাখতে হয়েছে। ওই হাসপাতালে বর্তমানে অন্তত ৬জন বয়স্ক মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে আমরি হাসপাতালেও ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হয়ে অনেকে ভর্তি হচ্ছেন। মোটামুটি জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এই ভর্তির সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। কয়েকজনকে আইসিইউতে ভর্তি করতে হয়েছে। কয়েকজনের মধ্যে নিউমোনিয়ার লক্ষণ রয়েছে। তাদের অবস্থা যথেষ্ট মারাত্মক। কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে এই ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা যথেষ্ট বেশি।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে অনেকটা স্বস্তি হতে পারে। তারা অন্যান্যদের তুলনায় একটু কম ভুগবেন। তারা আক্রান্ত হলেও দ্রুত সেরে উঠবেন। তাদের মধ্যে খুব কমজনকেই হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
রিপোর্ট অনুসারে উডল্যান্ডস হাসপাতালেও অন্তত ৫জন রোগী ইনফ্লুয়েঞ্জাতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে সর্দি কাশির প্রবণতা রয়েছে। তবে অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় একটি ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত হলে অপর ভাইরাসের প্রবণতা কিছুটা কমে যায়। এক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রবণতা কিছুটা কমেছে। আর অন্যদিকে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রবনতা বাড়ছে। এর জেরে জ্বর, সর্দি কাশিতে ভুগছেন অনেকেই। প্রবীণ মানুষ যাঁদের কো মর্বিডিটির সমস্যা রয়েছে তাদের ভুগতে হচ্ছে সবথেকে বেশি। ঋতূ পরিবর্তনের জেরে এই সমস্যাটা আরও বাড়ছে। সেক্ষেত্রে সতর্ক না হলে আক্রান্ত হতে পারেন আপনার পরিবারের লোকজন। সেকারণে বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া জরুরী।