জেলে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীকে জেরা করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অফিসাররা। তারপর সেখানে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইলেও সেটা বিশেষ ধোপে টেকেনি। এরপর সায়গল হোসেনকে নয়াদিল্লি নিয়ে যেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইডির আইনজীবীরা। আজ, মঙ্গলবার এই মামলার শুনানির শুরুতেই ইডি–কে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত। তাতে বেশ চাপে পড়ে যায় ইডির আইনজীবীরা।
ঠিক কী বলেছেন বিচারপতি? এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সরাসরি ইডির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘নয়াদিল্লিতে নিয়ে গিয়ে কেন জেরা করতে হবে? তদন্তকারী সংস্থা আমেরিকায় হতে পারে। চাইলে কি তারা সেখানেই নিয়ে যাবে? কিন্তু আপনি তো এখানে মামলা নথিভুক্ত করেছেন। তা হলে কলকাতার পিএমএলএ কোর্টে হাজির না করিয়ে নয়াদিল্লি নিয়ে যেতে চান কেন?’ এই পর পর প্রশ্নে বেসামাল হয়ে পড়েন ইডির আইনজীবীরা বলে আদালত সূত্রে খবর।
ইডি ঠিক কী বলেছে আদালতকে? কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, সায়গল হোসেনকে নয়াদিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরার যুক্তি হিসাবে ইডি আদালতকে বলেছিল, ‘মূল মামলা নয়াদিল্লি থেকে হয়েছে। কলকাতায় তদন্তকারী সংস্থাটির শাখা দফতর। এখানে ইসিআইআর দায়ের করা হয়েছে। যেহেতু মূল মামলা নয়াদিল্লির এবং অফিসাররা নয়াদিল্লি থেকেই আসছেন তদন্ত করতে, তাই সায়গলকে নয়াদিল্লিতে নিয়ে গিয়ে হেফাজতে নেওয়া দরকার। আর তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার।’ যে যুক্তিতে আমল দিল না আদালত।
কেন ইডির আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করা হল? গরু পাচার মামলাতেই অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীকে হেফাজতে নিয়েছে ইডি। এই সংক্রান্ত মামলা চলছে দিল্লি হাইকোর্টে। ইডিই ওই মামলা দায়ের করেছিল। কলকাতা হাইকোর্টে সেই তথ্য দিয়ে ইডির আইনজীবী যুক্তি দেন মামলা নয়াদিল্লিতে বলেই তাঁরা সায়গলকে নিয়ে যেতে চান সেখানে। তখন বিচারপতি ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘আমেরিকায় দফতর হলে সেখানেও নিয়ে যেতেন?’ তারপরই বিচারপতি জানিয়ে দেন, দিল্লি হাইকোর্ট যদি হাজিরা দিতে বলে, যদি ওয়ারেন্ট দেখাতে পারেন, তবেই অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।