ইডি–সিবিআই বাংলায় অভিযান চালালেই আতঙ্ক তৈরি হয়। আবার কাকে গ্রেফতার করবে? এই প্রশ্ন মনে জেগে ওঠে। সেখানে এবার দেখা গেল আর্থিক প্রতারণার অভিযোগকে সামনে রেখে বাংলায় ঝাঁপিয়ে পড়ল ইডি। এই বাংলায় বসে বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে তদন্ত করতে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বিদেশি নাগরিকদের এদেশ থেকে সফটওয়্যার পরিষেবা দেওয়ার ফাঁদ পাতা হয়েছিল। আর সেই ফাঁদ পেতে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই মামলায় শহর–জেলা মিলিয়ে ১০টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাল ইডি। বৃহস্পতিবার বালিগঞ্জ, বাঙুর অ্যাভিনিউ, সল্টলেক সেক্টর ফাইভ, পিকনিক গার্ডেন, তপসিয়া, রাজারহাট, নিউটাউন এবং ডোমজুড়–সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।
ইডি সূত্রে খবর, এই গোটা প্রতারণার ক্ষেত্রে একটি চক্র কাজ করে। যার পান্ডা রাজেশ গোয়েঙ্কা নামে এক ব্যবসায়ী। এই রাজেশ গোয়েঙ্কার বাড়ি থেকে তল্লাশি শুরু হয়। তারপর তাঁর ঘনিষ্ঠদের বাড়ি, অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। বেশ কয়েকজনকে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই চক্রটি এদেশ থেকে বসে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার বাসিন্দাদের আর্থিক প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ। কলকাতা শহরে একাধিক অফিস খুলে এই প্রতারণা চক্র কাজ করেছে। সেই তথ্য হাতে আসতেই তল্লাশি শুরু করে ইডি। অনলাইন ব্যবসাকে ঢাল করে বিদেশিদের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিমানবন্দরে ইউজার ডেভেলপমেন্ট ফি বাবদ যথেচ্ছ টাকা নেওয়া হচ্ছে, সরব সৌগত
এই প্রতারণায় ব্যবহার হয়েছে দেদার কালো টাকা। সেসব কালো টাকা নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে ক্রিপটোকারেন্সির মাধ্যমে। তারপর সেই কালো টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরও সন্ধান পেয়েছে ইডি। সেগুলি এখন যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তবে কালো টাকা যে ঢুকেছে এবং বিদেশে পাচার হয়েছে সেই তথ্য পেয়েছে ইডি। শুধু তাই নয়, এই প্রতারণা চক্রের মাথা অনেক। একাধিক ব্যক্তি এই প্রতারণা কাজের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ। ইডি যে তথ্য পেয়েছে তাতে এই একাধিক ব্যক্তিকে যুক্ত করেছে ব্যবসায়ী রাজেশ গোয়েঙ্কা।
ইডির হাতে আসা তথ্যের ভিত্তিতে বাগুইআটির আটঘড়া এলাকায় রাজেশ গোয়েঙ্কার ফ্ল্যাট এবং অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে থাকা একাধিক ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন এবং বিপুল পরিমাণ সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেখান থেকে বেশ কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আর রাজেশ গোয়েঙ্কার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের বাড়ি এবং অফিস থেকেও ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ড উদ্ধার হয়েছে। তা থেকে প্রতারণার একাধিক প্রমাণ পেয়েছে ইডি। আর কলকাতা থেকেই ওই প্রতারণা চক্র চালানো হতো। অন্যান্য রাজ্যেও প্রতারণা চক্রের জাল বিস্তার হয়েছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে ইডি।