বর্ষা শুরু হতেই বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে চিন্তা বেড়ে যায় কলকাতা পুরসভার। অতীতে বর্ষাকালে বিপজ্জনক বাড়ির অংশ ধসে পড়ে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুরসভার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতায় প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। যার মধ্যে ৫০০টির অবস্থা খারাপ। ইতিমধ্যেই বর্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে চিন্তিত কলকাতা পুরসভা। বাড়িগুলি খালি করার নোটিশ দেওয়া হলেও বেঁকে বসছেন মালিক, ভাড়াটেরা। তারা আদালতে গিয়ে পুনরায় বিপজ্জনক বাড়িতেই থাকছেন। এই অবস্থায় শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলি পরিদর্শনে যাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা।
আরও পড়ুন: জরাজীর্ণ অবস্থা পার্ক সার্কাস বাজারের, কিন্তু কেন আটকে যাচ্ছে সংস্কার?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধর্মতলার মোড়ে দুটি বিপজ্জনক বহুতল রয়েছে। গত ১০ জুন নোটিশ দিয়ে তিন দিনের মধ্যে ওই বাড়ি দুটি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু, বাড়ির ভাড়াটেরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই অবস্থায় কিছুই করার থাকছে না কলকাতা পুরসভার। বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের মতে, ওই বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। যেকোনও সময় বাড়ি ভেঙে পড়ে বিপদ ঘটতে পারে। এই অবস্থায় বাড়ি খালি না হওয়ায় যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য বাড়ির আশেপাশে জাল লাগিয়ে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। মঙ্গলবার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা পুরসভার আধিকারিক কর্মীরা ওই বাড়ির আশেপাশে জাল লাগাতে যান।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ি দুটির মালিক হল এলআইসি। সেখানে ৩০ জন ভাড়াটে বহু বছর ধরে ব্যবস্থা করছেন। এর মধ্যে একটিতে ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। তাদের বক্তব্য, পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা যে সার্ভে করেছেন তাতে স্পষ্ট যে বাড়ির অবস্থা এতটাও খারাপ নয়, যে পুরো বাড়ি ভাঙতে হবে। বাড়ি সংস্কারের জন্য মালিককে একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও অনুমতি দেয়নি বলে তাদের অভিযোগ। এমনকী বাড়ির দেওয়ালে জন্মানো গাছও কাটার অনুমতি দেয়নি তারা। ভাড়াটেদের বক্তব্য, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে ব্যবসা করছেন। ফলে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ এখানে তাঁদের রুটি রুজির ব্যাপার রয়েছে। যদিও বর্তমানে বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন হওয়ায় এলআইসি কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ধর্মতলার ওই দুটি বিল্ডিং ছাড়াও শহরের বহু জায়গায় এরকম অনেক বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। সেক্ষেত্রে বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে অনেকে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে পুরসভাকে। যদিও আধিকারিকদের বক্তব্য, মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলি ধরে ধরে পরিদর্শন করছেন ইঞ্জিনিয়াররা। সেক্ষেত্রে বিপজ্জনক বাড়ি দ্রুত সংস্কারের আর্জি জানানো হচ্ছে মালিক ভাড়াটেদের।