‘ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে যথেষ্ট সভা-র্যালি হয়েছে, এবার মানুষকে বিচার করতে দিন।’ মঙ্গলবার করোনা সংক্রান্ত মামলায় এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থেট্টাথিল ভাস্করণ নায়ার রাধাকৃষ্ণণ। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, করোনা বিধি মেনে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্নের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তাঁদের। পাশাপাশি রাজ্যকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সাহায্য করতে হবে। আদালতের আরও নির্দেশ, কেন রাজ্যের এ বিষয়ে এখন কিছু করার নেই, বা তারা করতে পারবে না, তা মামলার পরবর্তী শুনানিতে আদালতকে ব্যাখ্যা করে জানাতে হবে।
মামলার শুনানি চলার সময় রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণে উদ্বেগ ধরা পড়ে। তিনি বলেন, ‘ নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট পরিমাণে মিটিং—মিছিল ও সভা হয়েছে।এখন মানুষের বিচার করার সময়। তাঁদের বিচার করতে দিন।’ এরপরেই তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলেন, ‘এই অতিমারীর সময় করোনা বিধি মেনে সুস্থভাবে নির্বাচন প্রক্রিয় সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো কমিশনের রয়েছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করুক।’ এর জন্য প্রয়োজনে সবরকম ভাবে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।’
মামলার শুনানি চলাকালীন মামলাকারীর তরফে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, ‘নির্বাচনের এই পরিস্থিতিতে কমিশনেরই শুধু দায়িত্ব আছে তা নয়। করোনা পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপের দিকে না এগোয়, সেই ব্যাপারে রাজ্যের প্রশাসনের একটা দায়িত্ব রয়েছে। কারণ ইতিমধ্যেই হাসপাতালগুলি করোনা রোগীতে ভরতি হয়ে গিয়েছে। বেড খালি পাওয়া যাচ্ছে না। অক্সিজেন নেই।’ মামলাকারীদের তরফে আরও বলা হয়, 'ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদের দু’জন প্রার্থী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। আদালতের উচিত জনসভা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া। তা না হলে সাধারণ মানুষকে আটকানো সম্ভব নয়।’
তখনই রাজ্যের তরফের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হওয়ার পর নীতিগত কোনও সিদ্ধান্ত তাঁরা নিতে পারেন না। তাই পুরোটাই এখন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। এরপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যেকে নির্দেশ দেয় যে, কেন রাজ্যের এখন কিছু করার নেই বা তাঁরা করতে পারবেন না, সেটা আগামী বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী শুনানিতে ব্যাখ্যা করে আদালতকে জানাতে হবে।