বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশংসায় ভাসালেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার সম্মেলনের প্রথম দিনে বক্তব্য রাখতে উঠে তিনি বলেন, নিজের ভাবনায় আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করেন।
এদিন সৌরভ তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, ‘যখন দেখি শিল্পজগতের প্রথিতযশারা আমাদের রাজ্যকে বড় বিনিয়োগের যোগ্য বলে মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গে বেড়ে ওঠা একজন মানুষ হিসাবে আনন্দিত হই। যখনই আমি বাংলার বিষয়ে ভাবি, আমি তার সঙ্গে বম্বে, হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙ্গালোরের সঙ্গে তুলনা করি। ভাবি আমাদের যুবাদের কাছেও কি তাদের সমান সুযোগ সুবিধা রয়েছে? আর আমি অবশ্যই বলব, নিজের ভাবনায় আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করেন।’
তিনি বলেন, ‘গত ১ বছর ধরে আমরা এখানে বিনিয়োগের চেষ্টা করছি। মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত মানুষ, তার পরেও তিনি যে ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁর আধিকারিকরা যে ভাবে সহযোগিতা করেছেন, এক কথায় অভূতপূর্ব।’
সৌরভ আরও বলেন, ‘উনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন তবে আমাদের কাছে দিদি। আর আমি মনেপ্রাণে তাই মনে করি। সব সময় পাশে থাকা, খুঁটিনাটির প্রতি নজর… তিনি একজন সাধারণ মানুষের মতো বাঁচেন। আপনি যখন তাঁর সঙ্গে কথা বলেন, সাহায্যের জন্য তাঁকে SMS করেন, অনেক সময় মনে হয়, একজন মুখ্যমন্ত্রী ১ মিনিটের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য সময় কোথা থেকে জোগাড় করেন। আশা করব আপনার নেতৃত্বে রাজ্য ও এই শহর আরও উন্নততর হতে থাকবে।’
বলে রাখি, গত বছর স্পেন সফরে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মাদ্রিদে শিল্প সম্মেলন থেকে পশ্চিমবঙ্গে লৌহইস্পাত কারখানা গড়ার ঘোষণা করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন ৬ মাসের মধ্যে কারখানা তৈরির কাজ শেষ হবে। সেজন্য প্রথমে চিহ্নিত করা হয়েছিল শালবনিতে জিন্দলদের ফেলে যাওয়া কারখানার জমি। কিন্তু আইনি জটে সেখানে কারখানা করা যায়নি। এর পর চন্দ্রকোণায় প্রয়াগ ফিল্ম সিটির পরিত্যক্ত জমি সৌরভের সংস্থাকে ১ টাকার বিনিময়ে দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিতরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় এভাবে ১ টাকার বিনিময়ে জমি দেওয়া যাবে না। ওই জমি মূল্য নির্ধারণ করবে কেন্দ্রীয় সংস্থা SEBI. তার পর তার নিলাম হবে। নিলামে ইচ্ছা করলে সৌরভের সংস্থাও অংশগ্রহণ করতে পারে। ফলে বছর ঘুরলেও সৌরভের কারখানার জন্য এখনও বিবাদহীন জমিই দিতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তার পরেও মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সৌরভ।