অঙ্গদানের ক্ষেত্রে দাতার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তাই দাতা অঙ্গদান করতে পারবেন না। স্বাস্থ্য দফতরের এমনই যুক্তিতে জীবনহানি ঘটতে বসেছিল এক চিকিৎসকের। সেই সংক্রান্ত মামলায় স্বাস্থ্য দফতরের যুক্তিকে গ্রহণ করল না কলকাতা হাইকোর্ট। তার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য দফতরের উপদেষ্টাকে কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। হুগলির চিকিৎসক পীযুষকান্তি দে-র করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্রকে ১০ কোটি টাকা দান করলেন, নামও জানাতে চান না
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ওই চিকিৎসকের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এরপরে গত বছর চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে তিনি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে রাজি হন। তার মায়ের সঙ্গে রক্ত গ্রুপ মিলে যায়। কিন্তু তার মায়ের ক্যান্সার থাকায় তিনি ছেলেকে কিডনি দিতে পারেনি। এরপরে শ্রীরামপুরের বাসিন্দা সুমিত দে নামে তার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়র সঙ্গে তার রক্তের গ্রুপ মিলে যায়। সুমিত তাকে একটি কিডনি দ্বিতীয় রাজি হয়ে যান। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় রাজ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়, দাতার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা থাকায় তিনি অঙ্গদান করতে পারবেন না।
এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চিকিৎসক। তার আইনজীবী বলেন, ফৌজদারি মামলা থাকলে যে কিডনি দেওয়া যাবে না এমন কোনও আইন নেই, অথচ তাদের বাধা দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। একইসঙ্গে অঙ্গদানের ক্ষেত্রে পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট নেওয়ার ফলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয় বলেও তিনি তুলে ধরেন। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে মামলাটি চলছিল। সেখানে সিঙ্গেল বেঞ্চ হলফনামা তলব করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার কারণে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন চিকিৎসক।মামলা চলাকালীন স্বাস্থ্য দফতর কার্যত স্বীকার করে নেই যে ফৌজদারি মামলা থাকলে কিডনি দেওয়া যাবে না এই ধরনের আইনগত কোনও বাধা নেই। এরপরে আদালত দ্রুত স্বাস্থ্য দফতরকে সিদ্ধান্ত নিতে বলে।