করোনার টিকাকরণ শুরু হওয়ার আগেই তার কৃতিত্ব কে নেবে তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক তরজা। আর এই বিতর্কের কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা একটি চিঠি। যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘সমস্ত রাজ্যবাসীকে বিনামূল্য টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার।’ বিজেপি-সহ বিরোধীদের দাবি, আগেই বিনামূল্যে টিকার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ভোটের আগে তার কৃতিত্ব নিতে ঝাঁপিয়েছেন মমতা।
রাজ্যের পুলিশকর্তা ও স্বাস্থ্য আধিকারিকদের লেখা সেই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী করোনাযোদ্ধাদের কুর্নিশ জানিয়েছেন। এর পর লিখেছেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের সরকার রাজ্যের সমস্ত মানুষের কাছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে।’
এর পর মমতা লেখেন, ‘বাংলার সমস্ত পুলিশ, হোমগার্ড, অসামরিক প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক, সংশোধনাগার ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের কাছে আমরা এই ভ্যাকসিন পৌঁছে দেব।’
মমতার এই চিঠিকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘চাল – বাড়ির পর এবার টিকা চুরি করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই বলেছেন দেশের ১৩৫ কোটি মানুষ বিনামূল্যে টিকা পাবেন। তাহলে বাকি রইল কে?’ দিলীপের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী কি টিকা আবিষ্কার করেছেন?
মমতাকে টুইটে বিঁধেছেন বিজেপির পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যও। তিনি লিখেছেন, ‘করোনা মোকাবিলায় বিপর্যয়েন নাম পিসি। চিকিৎসক থেকে পুলিশকর্মী, সবাই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রতিবাদ করেছেন। এখন কেন্দ্রীয় সরকার যখন ৩ কোটি করোনাযোদ্ধাকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে, তখন পিসি তার কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য দৌড়াচ্ছেন।’ মমতার চিঠির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘ভোটের আগে টিকা ঘুষ দিতে চাইছেন মমতা।’
বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্যের প্রতিটি মানুষের কাছে টিকা পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার নিরলস কাজ করছে। তারা কৃতিত্ব নিতে চাইলে সমস্যা কোথায়?’
আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু করে করোনা টিকা প্রদান। প্রথমে টিকা পাবেন চিকিৎসক ও করোনাযোদ্ধারা। তার পর টিকা পাবেন সাধারণ মানুষ।