দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে বেশকিছু কথা বলে গিয়েছেন। যা দলের বাইরে কেউ বলতে চাননি। তাও নানা সূত্রে তা প্রকাশ্যে এসেছে। বিজেপি নেতৃত্বকে অমিত শাহ বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে হারানো প্রয়োজন শুধু রাজ্যের মানুষের জন্য নয়। দেশের জন্যও জরুরী। এই কথা থেকে স্পষ্ট যে, ২০২১ সালে পাখির চোখ বাংলা এবং দেশের মানচিত্রে গেরুয়া রং বিস্তার করতেই এমন বলা হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
তিনি সমাবেশ থেকে আগেই বলেছিলেন, ২৯৪ আসনের মধ্যে ২০০টি আসন পাবে বিজেপি। আর তা নিয়েই তারা বাংলার মসনদে বসবে। হিন্দুস্তান টাইমসকে বিজেপি’র এক নেতা জানিয়েছেন, ‘তৃণমূল সরকারকে না সরালে এই রাজ্য আর একটা বাংলাদেশে পরিণত হবে। যেভাবে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে তা ঠেকাতে বাংলা দখল জরুরী। আর তাহলেই দেশ তথা বাংলার মানুষ সুরক্ষিত থাকবে।’
রাজারহাটের ইস্টার্ণ জোনাল কালচারাল সেন্টারে গতকাল রুদ্ধদ্বার একটি বৈঠক হয়। যেখানে বিজেপি’র রাজ্য নেতৃত্বকে ভোকাল টনিক ও দাওয়াই দেন অমিত শাহ। সূত্রের খবর, দীর্ঘ এই বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনে তুলে ধরতে হবে রাজনৈতিক হিংসায় নিহত বিজেপি কর্মীদের কথা। ১০০ বিজেপি কর্মী তৃণমূলের হিংসার বলি হয়েছেন। সেটা যেন জলে না যায়।তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই–আন্দোলন জারি রাখতে হবে। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্খা বাদ দিয়ে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঠিক করবে বাংলায় বিজেপি’র মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন।
দু’দিনের দলীয় সফরে রাজ্যে এসে দলীয় নেতাদের একুশের লড়াইয়ের মন্ত্র দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা অমিত শাহ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে মাস পাঁচেক পরেই রাজ্যে বিধানসভা ভোটে। তার আগে নেতা–কর্মীদের ভোকাল টনিক দিয়ে অমিত জানিয়ে গেলেন, পাঁচ মাস পরিশ্রম করো, পঞ্চাশ বছর রাজত্ব করবে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, একুশে বাংলায় বিজেপির মুখ কে? সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় না শুভেন্দু অধিকারী? যদিও অমিত শাহ বলেন, ‘দুটো নামেই সীমিত নেই। অনেক লম্বা তালিকা। আমার সঙ্গে কারও কথা হয়নি।’ রাজ্য নেতৃত্বকে অবশ্য বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে আপনাদের ভাবতে হবে না। নিজেদের কাজ করে যান।
অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তাঁর কথায়, ‘২০২১ সালের নির্বাচনে জেতাটাই তো বিজেপি’র কাছে অলীক কল্পনা। তার পর হয়ত উনি টস করে ঠিক করবেন কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ দলের সভাপতি নির্বাচন করবেন। সংসদীয় বোর্ড আছে। অনেক জায়গায় তো মুখ ছাড়াই লড়েছি। এই দেখুন না উত্তরপ্রদেশেও তো কোনও মুখ ছিল না। তাও তিন চতুর্থাংশ আসন পেয়েছি।