মোবাইলের টাওয়ার বসানোর নাম করে প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসেছিল জালিয়াতরা। শহরের বুকে ভুয়ো কল সেন্টার খুলে রমরমিয়ে চলছিল লোক ঠকানোর ব্যবসা। প্রতারণার অভিযোগে এর আগে কেষ্টপুরের ওই কল সেন্টারে হানা দিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে এই চক্রের অন্যতম চাঁইয়ের খোঁজ পান তদন্তকারী আধিকারিকরা। এরপর অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্যতম পান্ডাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বিধাননগর আদালতে তুলে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছে তদন্তকারী আধিকারিকরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম শুভঙ্কর সাহা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এই চক্রের সদস্যরা ওই কল সেন্টার থেকে বিভিন্ন গ্রাহকদের ফোন করত। তাঁদেরকে মোবাইল টাওয়ার বসিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা রোজগারের লোভ দেখানো হত। যদি কেউ এই চক্রের ফাঁদে পা দিতেন, তাঁদের কাছ থেকে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র চেয়ে নেওয়া হত। তারপর শুভঙ্কর সাহা নামে ওই অভিযুক্ত গ্রাহকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খুলত বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্ক থেকে সেই অ্যাকাউন্টের এটিএম কার্ডও তুলে নিত বলে অভিযোগ উঠেছে।
তারপর বিভিন্ন গ্রাহকদের কাছ থেকে অ্যাডভান্সের নামে তোলা টাকা, প্রথম গ্রাহকের নামে তৈরি করা ভুয়ো অ্যাকাউন্টে ফেলতে বলত অভিযুক্ত। অভিযোগ উঠেছে, সেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকলেই এটিএম কার্ডের মাধ্যমে পুরো টাকাটাই তুলে নিত সে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে , শুধু কেষ্টপুরই নয়, শহরের একাধিক এলাকায় প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল অভিযুক্ত। একাধিক ভুয়ো কল সেন্টার খুলে ধৃত ওই অভিযুক্ত একই কায়দায় গ্রাহকদের প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি কেষ্টপুরের একটি বাড়িতে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়ে প্রতারণা চক্রটি জাঁকিয়ে বসেছিল। ওই ভুয়ো কল সেন্টার থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, হার্ডডিস্ক-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে মহিলা-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মোবাইলের টাওয়ার বসানোর নাম করে আর্থিক জালিয়াতি করত প্রতারকেরা। এই চক্রের সঙ্গে আর কে কে যুক্ত রয়েছে, তাছাড়া এই প্রতারণা চক্রের খপ্পরে পড়ে আর কারা কারা ঠকেছেন, ধৃতদের জেরা করে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।