বহুজাতিক সংস্থার নাম ভাঁড়িয়ে রমরমিয়ে চলছিল ভুয়ো কল সেন্টার। শহরের মধ্যে অফিস ভাড়া করে এই চক্রের পান্ডারা টার্গেট করছিল ব্রিটেনের নাগরিকদের। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দক্ষিণ শহরতলির তারাতলার আইটি পার্কের ওই অফিসে হানা দেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার অফিসাররা। ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তারাতলার ওয়েবেল আইটি পার্কে হানা দেন গোয়েন্দারা। সেখানে এক বহুতল দফতরের চারতলা থেকে ওই অভিযুক্তদের ধরা হয়।
মঙ্গলবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতদের জেরা করে আরও ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ তসফিন, মহম্মদ আলি, মিরজা রিয়াজ, কাশিফ হাসান, আরবাজ, শেখ জসিম, বাবলু প্রসাদ, তৌসিফ আলি, মহম্মদ শহবাজ, শাহিদ আফ্রিদি ও অভিজিৎ ঘোষ। ধৃতদের মধ্যে একজন আইটি বিশেষজ্ঞ।
এই নামী আইটি পার্কের ওই বহুতল দফতরে বসেই চলছিল জালিয়াতির কারবার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ওই দফতরে বসে ব্রিটেনের নাগরিকদের ফোন করা হত। নিজেদের অ্যামাজনের কাস্টমার কেয়ারের লাইফ স্টাইল সার্ভের কর্মী বলে পরিচয় দিত প্রতারকেরা। তারপর টার্গেট হওয়া ব্রিটেনবাসীকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হত। সেটা ডাউনলোড হতেই হঠাৎ তাঁদের কম্পিউটার মনিটরের স্ক্রিন উড়ে যেত। কলকাতার ওই দফতরে বসে ওই বিদেশিদের বলা হত যে তাঁদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ভাইরাসে আক্রান্ত। একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে পাউন্ড পাঠালে কম্পিউটার সারিয়ে দেওয়া হবে। এই পরিস্থিতিতে জালিয়াতদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য হতেন বিদেশিরা। তদন্তে নেমে ওই ভুয়ো কল সেন্টারে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। সেখান থেকে কম্পিউটার ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। কয়েকদিন আগেও পূর্ব কলকাতার বিভিন্ন এলাকা ও সল্টলেক থেকে ভুয়ো কল সেন্টার চালানোর অভিযোগে ৩৩ জনকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ।