ভুয়ো সিবিআই আধিকারিক শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে তদন্তকারীদের। জানা গিয়েছে, নিজেকে বন্দরের কর্তা হিসাবেও পরিচয় দিয়েছিল সে। বন্দরে তাঁর অবাধ যাতায়াত ছিল তাই–ই নয়, এম ভি হর্ষবর্ধনের মতো জাহাজের ভিতরে ঢুকেছিল শুভদীপ। কীভাবে সেই জাহাজে ঢুকতে পারল সেটা ভেবেই কুলকিনারা পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। শুভদীপকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জানা গিয়েছে, প্রতারক শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্দরে অবাধ যাতায়াত ছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে। শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ এম ভি হর্ষবর্ধনে ঢুকে পড়েছিলেন শুভদীপ। যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি নেই, সেখানে কীভাবে শুভদীপ ঢুকতে পারল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ ফেসবুক ঘেঁটে সেই ছবি পান বলে জানা গিয়েছে। দিল্লির চাণক্যপুরীর যে হোটেল থেকে শুভদীপকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই হোটেলেই তিনি গত ৯ জুলাই উঠেছিলেন। এর আগে এই হোটেলে শুভদীপ কয়েকজনকে ইন্টারভিউও নিয়েছে। যখন তাঁকে হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়, সেই সময় এই ধরনের কোনও পরিকল্পনা ছিল বলে পুলিশের অনুমান। তবে পুলিশ ঠিক সময়ে হোটেল পৌঁছে যাওয়ায় যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
মঙ্গলবার রাতে জোড়াবাগান থানা এলাকায় শুভদীপকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালায় তদন্তকারী অফিসাররা। বুধবার ধৃত শুভদীপকে নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়ার জগাছার চড়কডাঙায় তাঁর নিজের বাড়িতে। সেখানে বাবা এবং মায়ের সামনে বসিয়ে জেরা করা হয়। বাবা এবং মাকে শুভদীপ নিজের সম্পর্কে কী বলেছিলেন তা খতিয়ে দেখে নেন তদন্তকারীরা। তাঁরা বাড়িতেও তল্লাশি চালান। বাড়িতে মিলেছে দুটি ওয়াকিটকি। তদন্তকারীদের ধারণা, তার গাড়িচালককে দিয়ে ওয়াকিটকি ব্যবহার করাতেন শুভদীপ। এছাড়াও বাড়িতে সিবিআইয়ের ভুয়ো নিয়োগপত্র এবং নকল স্ট্যাম্প পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি একটি নামের তালিকাও পাওয়া গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, যাঁদের থেকে শুভদীপ টাকা নিয়েছেন সেটি সেই তালিকাই। তবে পুলিশ এই বিষয়ে এখনও পুরো নিশ্চিত নয়। যে গাড়িতে নীলবাতি লাগিয়ে শুভদীপ ঘুরতেন, সেটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতেই রবীন্দ্র সরণি এলাকা থেকে গাড়িটিকে আটক করে আনা হয়েছে জগাছা থানায়।